সৌরভ মাজি, বর্ধমান: আমন্ত্রণ করে খাইয়ে চোর অপবাদ। অপবাদ দেওয়ার পর বেধড়ক মারধরের অভিযোগ। অপমানে আত্মঘাতী হলেন যুবক। মৃতের নাম বাপন দাস (৩৬)। বাড়ির অদূরেই এক আমবাগানে তাঁকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখা যায়। গ্রামের বাসিন্দারাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। রবিবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের দেওয়ানদিঘি থানার পিলখুড়ি গ্রামে।
মৃতের মামা পরাণ দাস জানান, দিনকয়েক আগে প্রতিবেশী কাশীনাথ দাসের বাড়িতে অন্নপ্রাশণের নিমন্ত্রণ ছিল বাপনদের। গোটা দাস পরিবার আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিল। পরদিনও তাঁদের বাড়ি খাওয়া-দাওয়া করার জন্য বাপনকে ডাকা হয়। সেখানে কাশীনাথবাবুর অন্যান্য আত্মীয়রাও ছিলেন। এর দু’দিন পর কাশীনাথদের আত্মীয়রা চলে গেলে ওই বাড়ির লোকজন বাপনদের শুনিয়ে ৩০ হাজার টাকা চুরি কথা বলতে থাকে। এর পর দুটো দিন কাটতে না কাটতেই চুরির অপবাদ এসে চাপে বাপনবাবুর ঘাড়ে। বাপনবাবুকে বাড়িতে ডেকে অপমান করার পাশাপাশি ৩০ হাজার টাকা ফেরতও চায় তারা।
পরাণবাবু বলেন, “বাপনই চুরি করে থাকলে সঙ্গে সঙ্গে বলতে পারত। তিন-চারদিন পর থেকে অপবাদ দিতে থাকে কাশীনাথের বাড়ির লোকজন। মিথ্যা করে বদনাম করে টাকা দাবি করছিল ওরা।” অভিযোগ, শনিবার কাশীনাথবাবুর বাড়ির লোকজন বাড়ি বয়ে এসে বাপনবাবুকে মারধর করে যায়। মার খেয়েও আক্রান্ত বাপন দাস বার বার বলেছেন তিনি চুরি করেননি। শনিবার রাতে মারধর খাওয়ার পর চূড়ান্ত অপমানিত বাপন বাড়ি থেক বেরিয়ে যান। রাতভর বাড়ি না ফেরায় গোটা পরিবার চিন্তায় ছিল। এদিন সকালে নতুন পুকুরের এক মাছ চাষি পাড়ের ওই আম গাছ থেকে দড়ির ফাঁসে বাপনকে ঝুলতে দেখেন। তিনিই মৃতের পরিবারে খবর পাঠান। রবিবার রাত পর্যন্ত কাশীনাথ দাসের পরিবারের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি মৃতের আত্মীয়রা। ময়নাতদন্তের পর দেহ হাতে পেয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হলে তাঁরা লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। মৃতের স্ত্রী ঝর্ণা দাস বলেন, “আমার স্বামী অপরাধ না করেও অপবাদ পেলেন। আমার সংসারটাকে শেষ করে দিল ওরা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.