ফাইল ছবি।
অর্ণব আইচ: রেশনের চাল পাচার চক্র কলকাতায়! উত্তর কলকাতার জোড়াবাগানের একটি রেশন দোকান থেকে সরকারি যোজনার চাল পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়ল পাচার চক্রের এক পান্ডা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম লক্ষ্মণ সাউ। তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৪০০ কিলো চাল উদ্ধার হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখার আধিকারিকদের খবর আসে যে, রেশনের দোকান থেকে চাল বাইরে পাচার হচ্ছে। তার পরেই বুধবার অভিযান চালায় তাঁরা। তাতেই ধরা পড়ল চাল পাচারের অন্যতম চক্রী।
উত্তর কলকাতা (North Kolkata)-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই চক্র চলছে বলে খবর আসে পুলিশের কাছে। সেই খবরের ভিত্তিতেই ইবির গোয়েন্দারা কয়েকটি রেশন দোকানের দিকে নজরদারি শুরু করেন। তাঁরা জানতে পারেন যে, জোড়াবাগানের একটি রেশন দোকান থেকে চালের বস্তা পাচার হচ্ছে। সেইমতো এদিন রাস্তার উপর একটি ভ্যান আটকানো হয়। আটটি বস্তায় প্রায় ৪০০ কিলো চাল পাচার হচ্ছিল। সেগুলি গোয়েন্দারা উদ্ধার করেন। পাচারের অভিযোগে চক্রের এক মাথা লক্ষ্মণকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এনফোর্সমেন্ট শাখা বা ইবির গোয়েন্দারা জেনেছেন, সাধারণভাবে রেশন কার্ডের বিপরীতে সরকারি যোজনায় চাল পান সাধারণ মানুষ। পাচার চক্র সেই চালের একটি বড় অংশ সরিয়ে রাখে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, রেশন কার্ড যাঁদের রয়েছে, তাঁদের অনেকে চালের খোঁজ করলেও জানিয়ে দেওয়া হয় যে, চালের সরবরাহ হয়নি। অথচ রেশন দোকান থেকেই চোরাপথে পাচার হয়ে যায় সেই চাল। বস্তা বস্তা চাল ভ্যান বা অন্য গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় একটি গোডাউনে। মূলত জোড়াবাগান বা পোস্তা এলাকার কোনও গোডাউনে সেই চোরাই চাল মজুত করা হয়। এর পর অল্প পরিমাণে চাল গোডাউন থেকে বের করে পৌঁছে দেওয়া হয় বিভিন্ন দোকানে। সেখান থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি দামে বিক্রি হয় ওই রেশনের চাল। অভিযোগ, রেশনের দোকানের মালিক, কর্মী থেকে শুরু করে পাচারকারী ও বিভিন্ন দোকানের মালিকরাও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। বেশি দামের চাল বিক্রির লাভাংশ্য নিজেদের মধ্যে ভাগবটোরা করে তারা।
গত বছরই রেশন বন্টন দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে ইডি (ED)। তখনই রেশনের গম ও চাল কী কী পদ্ধতিতে পাচার হয়েছে ও এই দুর্নীতির বিপুল টাকা কীভাবে সরানো হয়েছে, তা সেই তথ্য আদালতে দেন ইডি আধিকারিকরা। এবার সরকারি যোজনার চাল পাচার ধরল কলকাতা পুলিশও। বুধবার ধৃত লক্ষ্মণকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃত ব্যক্তিকে জেরা করে চক্রের বাকিদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.