সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন বেধড়ক মারধরের জেরে মৃত্যুর অভিযোগ। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ল মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশীরা। স্থানীয়দের বিক্ষোভে রণক্ষেত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাট থানা এলাকা। ব্যারিকেড করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা পুলিশের। নামানো হয়েছে ব়্যাফ।
ঘটনার সূত্রপাত ৩০ জুন। ওইদিন মৃত আবু সিদ্দিক হালদারের কাকা মহসিন হালদারের বাড়ি থেকে সোনার গয়না চুরি হয়৷ তিনি পুলিশে অভিযোগ জানান। এর পর ১ জুলাই ঢোলাহাট থানার পুলিশ মহসিন হালদার ও তাঁর ভাইপো আবু সিদ্দিককে থানায় তুলে নিয়ে যায়। অভিযোগ, মহসিনকে দিয়ে ভাইপোর নামে জোর করে চুরির অভিযোগ লিখিয়ে নেওয়া হয়। এর পর আবু সিদ্দিককে থানায় দফায় দফায় মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ৪ জুলাই কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় আবু সিদ্দিককে। ওইদিন জামিন পান তিনি। তবে তখন তিনি গুরুতর অসুস্থ। তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবারের পর তাঁকে চিত্তরঞ্জন হাসপাতলে ভর্তির চেষ্টা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার যুবককে পার্কসার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। রাত দশটা নাগাদ যুবকের মৃত্যু হয়।
এর পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারের কারণেই মৃত্যু হয়েছে যুবকের। মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢোলাহাট থানার সামনে প্রবল বিক্ষোভ দেখায় উত্তজিত জনতা। রীতিমতো পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন মহিলারা। বাধা দিতে গিয়ে জনতার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন পুলিশ আধিকারিকরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামানো হয় ব়্যাফ। সব মিলিয়ে প্রবল অশান্তির পরিবেশ। এ বিষয়ে সুন্দরবনের পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানিয়েছেন, আদালতে পেশ করার সময় শারীরিক কোনও সমস্যা ছিল না। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে সুন্দরবন জেলা পুলিশ। এ বিষয়ে রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতা বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। শুনেছি চুরির ঘটনায় পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল। ঘটনা যাই হয়ে থাক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অবশ্যই পদক্ষেপ হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.