প্রতীকী।
মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে মানসিক ভারসাম্যহীন ভাইকে খুন। দেহ লোপাট করতে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দাদা ও আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় যাতে না মৃতদেহ ভেসে ওঠে তাই গলায় ইটের বস্তা ঝুলিয়ে দিয়েছিল তারা। এমনকি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে সেপটিক ট্যাঙ্কের তড়িঘড়ি ঢালাইয়ের ঢাকনা তৈরি করে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হওয়ায় জনরোষ আছড়ে পড়ে ঢাকনা দেওয়া পাতকুয়ার উপরে। সেটা ভাঙতেই সামনে এল খুনের কথা। ঘটনাটি হাওড়ার বাগনান থানার খাদিনান খাঁ পাড়া এলাকার। এদিকে এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা অভিযুক্তদের দোকান ও বাইক ভাঙচুর করে। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। খবর পেয়ে আসে বাগনান থানার বিশাল পুলিশ বাহিনীবাহিনী। বুধবার রাতে মৃতের স্ত্রী সাবানা বেগম বাগনান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত দুই দাদা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বাগনান থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম কুতুবউদ্দিন খাঁ ওরফে লালু (৩২)। তাঁরা পাঁচ ভাই। কুতুবউদ্দিন তৃতীয়। বড় দাদা মারা গিয়েছেন। রয়েছেন এক দাদা আল্লারাখা খান ও ভাই আজিজুল রহমান খান। সম্পত্তি নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। সম্পত্তি হাতাতে অনেক চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ। কয়েকদিন আগে কুতুবউদ্দিনের স্ত্রী বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন। বাড়িতে কুতুবউদ্দিন একাই ছিলেন। গত দিনতিনেক ধরে কুতুবউদ্দিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিকে, বুধবার সকালে কুতুবউদ্দিনের ভাইয়েরা রটিয়ে দেয় ভাই ট্রেনে কাটা পড়েছে। কিন্তু সে কথা প্রতিবেশীরা বিশ্বাস করেননি। তাঁরা দুই ভাইকে দোকান খুলতে বলেন। জোকা নিমতলার কাছে তাদের একটি কাঠের দোকান রয়েছে। সেখানেও কুতুবউদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। এরপর লোকেরা দোকানের পিছনে থাকা সেপটিক ট্যাঙ্ক দেখতে পান। আগে সেটা খোলাই থাকত। কিন্তু এদিন লোকেরা সেটির উপরে নতুন ঢাকনা দেখেন। তাতেই বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়।
তাঁরা সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খুলতে বলেন। সেটা খুলতেই সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে কালো কিছু দেখতে পাওয়া যায়। সেটা নাড়াচাড়া করতেই কুতুবেউদ্দিনের মৃতদেহ দেখতে পান সকলে। উদ্ধার করার পর দেখা যায় মৃতদেহের গলায় ইটের বস্তা বাঁধা রয়েছে। এদিকে এই ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। তারা অভিযুক্তদের দোকান ও বাইক ভাঙচুর করে। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। খবর পেয়ে বাগনান থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কুতুবউদ্দিনের স্ত্রী সাবানা বেগম অভিযোগ করেন, “স্বামীর অন্য ভাইয়েরা সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। স্বামী তাতে রাজি হচ্ছিল না। তাই ওকে বিভিন্ন সময় মারধর করত। সম্পত্তি হাতাতে ওকে মেরে ফেলেছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.