ছবিতে আক্রান্ত জামাই স্বদেশ মুখোপাধ্যায়।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বিজয়া সারতে এসে রাম ধোলাই খেলেন জামাই বাবাজি। শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী ও শাশুড়ির থেকে জুটল উত্তম মধ্যম। অভিযোগ, চেয়ারে বেঁধে রীতিমতো গণধোলাই দেওয়া হয়েছে। সাতসকালে জামাইয়ের আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। আক্রান্ত জামাইয়ের নাম স্বদেশ মুখোপাধ্যায়। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সিউড়ির অরবিন্দপল্লিতে।
এদিকে আক্রান্ত জামাইয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীরা। তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে অভিযুক্ত শ্বশুর ও শাশুড়িকে আটক করেছে। এই প্রসঙ্গে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সকালবেলায় চিৎকার শুনেই তাঁরা ছুটে এসেছিলেন। দেখেন শাশুড়ি ও স্ত্রী মিলে জামাইকে বেধড়ক মারছেন। চেয়ারের সঙ্গে হাত-পা বাঁধা থাকায় আত্মরক্ষার কোনও পথই পাচ্ছেন না ওই ব্যক্তি। মারমুখী মা-মেয়েকে তাঁরাই শান্ত করেন। তারপর আক্রান্তকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এদিকে মারের চোটে জামাইয়ের দুই হাতে ও পিঠে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। সারা শরীরে দাগও বসেছে।
আক্রান্ত স্বদেশবাবু জানান, তিনি পেশায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। বাড়ি লাভপুরের গুগা গ্রামে। ছ’বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী ডিভোর্সি। সম্প্রতি ওই ব্যক্তির মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আগে বারাণসীতে কর্মরত ছিলেন, এখন তাঁর বিহারে পোস্টিং। দিন ২০ আগে মায়ের শ্রাদ্ধশান্তি মিটলে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে দার্জিলিংয়ে বেড়াতে যান তিনি। প্রায় হাজার তিরিশেক টাকা খরচও হয়। সেখান থেকে ফিরেই শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন বিজয়া করতে। আসতে না আসতেই বিপত্তি। শুক্রবার আচমকাই স্ত্রী তাঁর কাছে ১৫ হাজার টাকা চান। তিনি শুধু কারণ জানতে চেয়েছিলেন। এই অপরাধেই তাঁর সঙ্গে বচসা শুরু করে দেন স্ত্রী। মেয়ের গলার আওয়াজ পেয়ে শাশুড়িও রণাঙ্গনে প্রবেশ করেন। তারপর মা-মেয়েতে মিলে চেয়ারের সঙ্গে তাঁকে বেঁধে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ, শাশুড়িই সুযোগ বুঝে বেশি মেরেছেন। কেননা স্ত্রীর মাথার রোগ রয়েছে। একটুতেই রেগে যান। কিন্তু শাশুড়ি সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষ। তিনি কেন মেয়ের কথায় জামাইয়ে গায়ে হাত তুললেন ? সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ থেকে তুই তোকারি কিছুই বাদ দেননি বলে অভিযোগ।
প্রতিবেশীদের দাবি, এই মারধরের ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রায়ই জামাইকে পেটান শাশুড়ি। তবে এদিন মারধরের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যেতেই তাঁরা প্রতিবাদ করেন। এই অভিযোগ শুনে শাশুড়ি ও শ্বশুরকে আটক করলেও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। অন্যদিকে আক্রান্ত জামাইকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এনিয়ে আক্রান্তের তরফেও হাসপাতালে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.