Advertisement
Advertisement

Breaking News

তৃণমূল

এত আসনে হার কেন? বিধায়কদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

পর্যালোচনায় বসছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

Mamata's MLAs face heat after Lok Sabha poll debacle
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:May 24, 2019 9:22 am
  • Updated:June 3, 2019 7:23 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যে এত আসনে হার কেন, তা নিয়ে এখন স্রেফ পর্যালোচনা। কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, পর্যালোচনার পর সেই সিদ্ধান্ত নেবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসে শাসানি দিয়ে গিয়েছিলেন ৪০ জন বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ভোটের ফলের যা ট্রেন্ড দেখা গেল, তাতে ১৮টি লোকসভা আসন তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে একটি লোকসভায় ৭টি বিধানসভার হিসাব ধরলে কম করে ১২৬ জন বিধায়ক এখন বিজেপির সাংসদদের আওতায়। প্রধানমন্ত্রীর কথা সত্যি হলে প্রশ্ন উঠছে, এই বিধায়কদের ভবিষ্যৎ কী হবে? তাঁরা যদি বিজেপির দিকে পা বাড়ান, তাঁদের ধরে রাখতে কি কোনও ব্যবস্থা নেবে তৃণমূল?

Advertisement

এত আসন হারের পর্যালোচনার পর তৃণমূলনেত্রী যে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করবেনই, তা দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একপ্রকার নিশ্চিত। রাজ্যের ১৬ জন মন্ত্রীর কেন্দ্রে দল পরাজিত হয়েছে। এই বিষয়টিও খেয়াল রাখছে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। তবে তা শাস্তিমূলক হবে, না কি, উলটে নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই বসে তার সমাধানসূত্র বের করবেন মমতা, তা নিয়ে এখনই কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় দল নেই। দলের এমন ফল, স্বাভাবিকভাবেই অনেকটা ধাক্কা। সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নিতে পারেন নেত্রী?

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূল হেরেছে বারাকপুর ও বনগাঁ আসন দু’টি। জেলার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বললেন, “দল বিষয়টা পর্যালোচনা করবে। আমরাও উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছি। কোনও একটা সিদ্ধান্ত তো নেত্রী নিশ্চয়ই নেবেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।” তবে এই ফলাফলের জন্য কোনও বিধায়কের বিরুদ্ধে কি জেলা নেতৃত্ব অন্তর্ঘাতের সন্দেহ করছে? সেক্ষেত্রে বিজেপির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগের সম্ভাবনাও থাকবে। জ্যোতিপ্রিয়বাবুর কথায়, “তা কী করে করি? একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই লড়াই করলাম। কাকে সন্দেহ করব?”

[ আরও পড়ুন: ‘দলের জয়, মানুষের জয়’, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভোটে জিতে আপ্লুত নুসরত ]

তৃণমূলের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হয়েছে উত্তরবঙ্গে। দার্জিলিং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট, মালদহ উত্তরের আসন ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। ফল খারাপ হলে ‘গদ্দার’-দের তাড়িয়ে দেবেন বলেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু এখন তিনি সংযত। তাঁর ব্যাখ্যা, “কাউকে সন্দেহ করছি না। আমার বিধায়করা প্রত্যেকে লড়াই করেছে।” তবে হারের ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারছেন না। বলছেন, “পাহাড় আর জঙ্গলমহলে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। তার পরও কেন মানুষ এভাবে পাশ থেকে সরে গেল, আমরা বুঝতে পারছি না।” এই প্রসঙ্গেই তিনি বামেদের দিকে আঙুল তুলেছেন। বলছেন, “আমরা কিন্তু আমাদের ভোটটা ধরে রেখেছি। বামেদের ভোট উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ৩০ থেকে ১ শতাংশে নেমে এসেছে। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, কারা বিজেপিকে জিতিয়েছে।” তবে শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা চায়নি। চাইলে তার ব্যাখ্যা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রবিবাবু। হার এসেছে আসানসোল, নদিয়ার রানাঘাটের মতো আসনেও। সেখানেও চলছে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ।

তবে দল এখনই কারও প্রতি কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে না বলেই জানাচ্ছে সিংহভাগ নেতৃত্ব। তাদের ব্যাখ্যা, বিজেপি নেতৃত্ব প্রথম থেকে উসকানোর চেষ্টা করছে। তেমনই কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে রাজ্য সরকারের ক্ষতি করতেই যে এমন কথা প্রধানমন্ত্রী বলেননি, তার কী প্রমাণ। একটি অভিযোগের ভিত্তিতে দলের বিধায়কদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে নিলে তার ফল হবে বিরূপ। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে পরাজিত সংসদীয় এলাকার বিধায়করা নেতৃত্বের খাঁড়া নেমে আসতে পারে বলে কিছুটা ভয়েই রয়েছেন। সেক্ষেত্রে বিধায়কদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত না হয়ে, তাঁদের অবস্থান বোঝার কাজ চালানো হবে। একইসঙ্গে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হবে, যে অযথা কারও বিরুদ্ধে কড়া হবে না দল। প্রথমে ভোটের ফলের পর্যালোচনা হবে। তার উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে ব্যবস্থা।

জঙ্গলমহলের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ মেদিনীপুর কেন্দ্রগুলিতেও ধরাশায়ী তৃণমূল। ঝাড়গ্রামের ফল নিজে চোখে দেখে এদিন রাতেই ফিরেছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনিও এ নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী নন। জানিয়েছেন, “এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলনেত্রী নেবেন।”

[ আরও পড়ুন: বারাকপুরে লক্ষ্যভেদ, দু-বারের সাংসদকে হারিয়ে দিল্লির পথে অর্জুন সিং ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement