স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা ও নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি: আজ, বৃহস্পতিবার আবার জমির অধিকার ফিরে পাবেন সিঙ্গুরের কৃষকরা৷ প্রায় ৯ বছর আগে যে জমিতে নেমে চারা পুঁতে আন্দোলনের বীজ রোপণ করেছিলেন, লক্ষ্মীবারে সেই জমিতে নেমেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবেন সরষের বীজ৷ মাঝে চলে গিয়েছে আন্দোলনের দীর্ঘ সময়৷ ধারাবাহিক কৃষক আন্দোলনের জয় এসেছে তাঁর নেতৃত্বেই৷ এবার তাই আইনি জয়ের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পুরনো কারখানার অংশের জমি চাষযোগ্য করে কৃষকদের ফিরিয়ে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী৷
উচ্চ আদালতের নির্দেশ ছিল, ১২ সপ্তাহের মধ্যেই কৃষকদের জমি চাষযোগ্য করে ফিরিয়ে দিতে হবে৷ নির্দিষ্ট সময়ের তিন সপ্তাহ আগেই শুরু হচ্ছে প্রক্রিয়া৷ কৃষকদের সঙ্গেই মাঠে নামবেন মমতা৷
সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকেই সিঙ্গুরজুড়ে শুরু হয়েছিল বিজয় উৎসবের আনন্দ৷ গত ১৪ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন জমি ফিরিয়ে দেওয়ার৷ সেদিন হয়েছিল কেন্দ্রীয় বিজয় উৎসব৷ আর বৃহস্পতিবার জমি ফিরে পাওয়ার আনন্দে দ্বিতীয়বার বিজয় উৎসব পালন করবেন সিঙ্গুরের মানুষ৷ সরষের বীজের পাশাপাশি সার বা কীটনাশকের সামগ্রীও দেওয়া হবে৷ তোড়ি সরষের বীজের ফলে দু’মাসের মধ্যেই ফসল ফলাতে পারবেন কৃষকরা৷ তাঁদের আগ্রহ মেনেই ফুলকপি, আলু, ঢেঁড়স, বেগুন চাষের জন্যও সামগ্রী বিলির ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে৷ প্রথমবার ফসলের জন্য রাজ্য সরকার সবরকম সাহায্য করবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো কৃষকদের দশ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থাও করবে জেলা প্রশাসন৷
বুধবার মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিঙ্গুরে গিয়ে জমি ফেরতের চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন৷ পরে সাংবাদিকদের বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিঙ্গুর আন্দোলন দেশে কৃষক আন্দোলনের পথিকৃৎ৷ দুপুর দু’টোয় মুখ্যমন্ত্রী নিজে মাঠে নেমে কৃষকদের হাতে জমি তুলে দেবেন৷ আমরা মাঠে যাব না৷ মঞ্চে থাকব৷ দূর থেকে শুধু এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে দেখব৷” মন্ত্রী-আমলারা তো থাকবেনই, জমি আন্দোলনের শহিদ পরিবারের সদস্যদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই ১০০ একরের মতো জমি কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ গোপালনগর মৌজার সেই কৃষকদের নামের তালিকাও তৈরি হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী গোপালনগরের দিকের মঞ্চেই থাকবেন৷ এছাড়া খাসেরভেড়ি, সিংহেরভেড়ি, বাজেমেলিয়া, বেড়াবেড়ি মৌজাতেও মঞ্চ তৈরি হবে৷ হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ কারখানার অংশের ৮০ শতাংশের বেশি জমি অর্থাৎ সবমিলিয়ে ৮০০ একরের বেশি জমি এখনই চাষযোগ্য করে ফেলা হয়েছে৷
আগামী ১০ নভেম্বরের আগেই জমি চাষযোগ্য করে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে৷ প্রতিদিনই কোনও না কোনও মন্ত্রী সিঙ্গুরে থাকবেন৷ শেষ দিনে থাকবেন শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ এদিকে ২১ অক্টোবর ইকো পার্কে শিল্পমন্ত্রী বিজয়া সম্মিলনীতে দেশের শিল্পপতিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী শিল্পপতিদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করবেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.