Advertisement
Advertisement
মুখ্যমন্ত্রী

কাজে এত খামতি কেন? দঃ দিনাজপুরের জেলাশাসককে তীব্র ভর্ৎসনা মুখ্যমন্ত্রীর

'এনআরসি নিয়ে অযথা ভয় পাবেন না', জেলাবাসীকে আশ্বস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

Mamata slams South Dinajpur DM over poor developmental work
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 19, 2019 4:15 pm
  • Updated:June 22, 2022 1:50 pm  

রাজা দাস, গঙ্গারামপুর: কাজে অজস্র খামতি। অর্ধেক বিভাগ কাজে ফেল। রিপোর্ট কার্ড খতিয়ে দেখে কার্যত অগ্নিশর্মা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে সেই রাগ উগরে দিলেন তিনি। কড়া ধমক দিলেন জেলাশাসক নিখিল নির্মলকে। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সব বিভাগের কাজ যাতে ১০০ শতাংশ শেষ হয়ে যায়, বারবার সে সম্পর্কে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশ সংলগ্ন দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীকে এনআরসি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার আশ্বাস বলেন।
১০০দিনের কাজে অনেক পিছিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। জল ধরো, জল ভরো-সহ একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে পারফরম্যান্স খারাপ। মঙ্গলবার গঙ্গারামপুরে জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে তারই কৈফিয়ত চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেই হতাশার সুরে বললেন, ‘কাজই হয়নি, তো কাজের কী খতিয়ান নেব?’ বিরক্তি প্রকাশ করেই প্রশ্ন করেন, ‘কাজে স্বাধীনতা পেয়েছো, পরিকাঠামো পেয়েছো। তাও কেন কাজ হয়নি? মৎস বিভাগ কী করছিল? কেন ঠিকমতো মাছ চাষ হয়নি? তপনে জলপ্রকল্পের কাজ এতদিন আটকে আছে কেন?’ জেলাশাসকের কাছেই এসবের উত্তর চান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ভর্ৎসনা করেন।

[আরও পড়ুন: পোশাক বিধি না মানায় প্যান্ট খুলিয়ে ছাত্রীদের শাস্তি, কাঠগড়ায় বোলপুরের স্কুল]

বিভিন্ন কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেন শেষ হয়নি, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কাজের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রত্যেকের জবাব তলব করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেও জানিয়ে দিন, ‘সরকারের একটা সীমিত সময় আছে। তার মধ্যেই কাজ শেষ করতে হয়। জনগণ কাজ না পেলে তোমাদের নয়, আমাকেই এসে বলবে। কাজ ফেলে রাখা চলবে না। ফেলে রাখলে, ব্যবস্থা নেব।’ বিডিওদেরও ভালভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
সরকারি প্রকল্পের কাজকর্ম কেমন চলছে, তার খোঁজখবর নিতে গিয়ে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের কাছে প্রকল্পগুলি সম্পর্কে জানতে চান। দেখা যায়, মাত্র তিনজন জেলা পরিষদ সদস্য ছাড়া কেউই প্রকল্প সম্পর্কে তেমন ওয়াকিবহাল নন। এতে যেমন বিস্মিত তিনি, তেমনই খেপেও উঠেছেন। সচিবদের উদ্দেশে বলেন, ‘এঁদের তো ঠিকমতো ট্রেনিংই হয়নি। কী করে এঁরা জনগণকে বলবেন? এঁদের শিবির করে ঠিকমতো প্রশিক্ষণ দিন।’ জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের পারফরম্যান্স দেখেও বেশ অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, কোনও নেতিবাচক মানসিকতা থাকলে কাজই হবে না। কাজ করতে হবে, এই মনোভাব থাকলেই সব ঠিকমতো করা সম্ভব। জেলাশাসককে ফের বলেন, ‘একা একা কিছু হয় না। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনারাও কোনও কাজ আটকে গেলে, জেলাশাসকের কাছে যাবেন। দেখুন, কাজ না হলে আমি কিন্তু কাউকে ছেড়ে কথা বলব না।’

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘সংখ্যালঘুদের উসকানি দেওয়া হচ্ছে’, নাম না করে ওয়েইসি সম্পর্কে সতর্কবার্তা মমতার]

এমনিই এনআরসি-র আশঙ্কায় তটস্থ সীমান্তবর্তী জেলাগুলির মানুষজন। এই পরিস্থিতিতে পরিচয়পত্র হিসেবে আধার কার্ডের আবেদন ফেলে রাখার অভিযোগ কানে পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের এ নিয়ে চূড়ান্ত ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘কেন এটা ফেলে রাখা হচ্ছে? এটা মানুষের পরিচয়ের ব্যাপার, জীবন-জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। দ্রুত আবেদনগুলি দেখে আধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’ এরপর জেলাবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘যারা জন্মসূত্রে এখানকার বাসিন্দা, তাদের কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। উদ্বাস্তুরাও নাগরিক। অযথা এনআরসি নিয়ে ভয় পাবেন না। ওদের কথা বিশ্বাসও করবেন না। এখানে এভাবে এনআরসি করা যাবে না।’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement