শুভময় মণ্ডল: গত মাসে ঘূর্ণিঝড় আমফানের জেরে দুই ২৪ পরগনা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় চাষজমির বিপুল ক্ষতি হয়েছে। খেতের ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন একাধিক জেলার বহু চাষি। বাংলার সরকার কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে। পাঁচ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গিয়েছে তাঁদের বাড়ি সারানোর টাকা। ২৩ লক্ষ কৃষক পেয়ে গিয়েছেন তাঁদের শস্যের ক্ষতিপূরণের অর্থ। দুই লক্ষ পান চাষির হাতেও পৌঁছেছে তাঁদের ক্ষতিপূরণ। সব মিলিয়ে টাকার অঙ্কে হিসাবটা ১৪৪৪ কোটি টাকা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের কৃষকদের ‘বাংলার শস্যবিমা’ প্রকল্পের আনার কথা। এবার কৃষকদের বিমার আবেদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করার জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ISRO’র সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
জানা গিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য রাজ্য সরকার চাষিদের যে ক্ষতিপূরণ দেয় অনেক সময় সেই প্রক্রিয়া মন্থর গতিতে হয়। তার একটা কারণ হল দ্রুত সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা। কৃষকদের কাছে গিয়ে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা, তালিকা তৈরি করে স্ক্রুটিনি করা, ক্ষতির পরিমাণ কতা তা টাকার অংকে নির্ধারণ করা। এই যাবতীয় কাজের জন্য লোকবল এবং সময় লাগেই। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ‘বাংলার শষ্যবিমা’ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকের বিমার আবেদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করার জন্য এবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ISRO’র ডেটা সংগ্রহের প্রযুক্তি ব্যবহার করবে রাজ্য সরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য হওয়া ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আর এই কাজে ISRO’র প্রযুক্তি ব্যবহার করবে রাজ্য।
করোনা থেকে আমফান ঝড়। পরপর বিপর্যয়। কোনওরকম আয় ছাড়াই তা সামলাতে হচ্ছে বলে বারবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কোনওভাবেই কোনও কিছুর সঙ্গে আপস করেননি। লকডাউনে দেশের অর্থনীতির ধাক্কা সামলাতে ও পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভেবে একাধিক প্রকল্প ও অনুদান ঘোষণা হয়। কিন্তু সেসব কোনওভাবেই গরিব মানুষের পকেটে পৌঁছবে না বলে সমালোচনা শুরু হয় দেশজুড়ে। তার মধ্যেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠিয়ে মমতা বুঝিয়ে দেন আসল মানবদরদী তিনিই। এ বিষয়ে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর একটাই উদ্দেশ্য, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে তাড়াতাড়ি টাকা পান। তাই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে কৃষিদপ্তর। ফলে ইসরোর উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে সরাসরি চাষির ফসল নষ্টের পরিসংখ্যান পেয়ে যাবে বিমা সংস্থা। ফলে ক্ষতিপূরণ পেতে খুব কম সময় লাগবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.