টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহলে তাঁদের উপস্থিতির ভালই জানান দিয়েছে গেরুয়া শিবির৷ এতকাল যাদের দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হত এবার তাঁরাই একাধিক পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছে৷ বিজেপির এই উত্থানকে যে ভাল চোখে দেখছে না শাসক তা পঞ্চায়েতের ফলাফল ঘোষণার পরই স্পষ্ট করেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ উনিশের লোকসভার আগে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে তাই দলীয় নেতাদের প্রাণ লড়িয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী৷ সূত্রের খবর, সেলক্ষ্য থেকেই চলতি মাস থেকেই জঙ্গলমহলের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া শুরু করছে রাজ্য সরকার৷
[জেলাশাসককে হুমকি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ বিজেপি নেতার]
এতদিন এই তিন জেলার বাসিন্দাদের একাংশ পেলেও জঙ্গলমহলের একটা বড় অংশের হাতে এখনও হাতে পৌঁছায়নি ডিজিটাল রেশন কার্ড৷ যা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যেই তৈরি হয়েছে ক্ষোভ৷ কারণ, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার বাসিন্দারা ডিজিটাল রেশন কার্ডের দাবি তুলে আসছিলেন। ক্ষোভের সীমা এতটাই প্রখর হয় যে, তা সামাল দিতে বাঁকুড়ার দু-একটি এলাকায় ডিজিটাল রেশন কার্ডের টোকেন দিতে হয় প্রশাসন৷ সূত্রের খবর, এই তিন জেলার আঞ্চলিক খাদ্য দপ্তরগুলির থেকে রাজ্য খাদ্য দপ্তরকে এই সমস্যার কথা জানানো হয়৷ এমনকি খাদ্য ভবনে এই তিন জেলার খাদ্য নিয়ামক ও সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত জেলাশাসকদের নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও হয়। বৃহস্পতিবারও এই সংক্রান্ত একটি জরুরি বৈঠক হয় খাদ্য ভবনে। এদিনের বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শেষ থেকেই জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড তুলে দেওয়া হবে।
[টসে বাজিমাত বিরোধীদের, বৃহত্তম দল হয়েও পঞ্চায়েত অধরা তৃণমূলের]
জানা গিয়েছে, খাদ্য দপ্তরের নির্দেশের পরেই তিন জেলার খাদ্য নিয়ামকরা জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতে ডিজিটাল রেশন কার্ড তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। বাঁকুড়ার খাদ্য নিয়ামক আবির বালি জানান, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর এই সংক্রান্ত একটি বৈঠক ডেকেছে জেলা প্রশাসন। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কত তারিখ থেকে এবং কোথায় ও কীভাবে বাঁকুড়ার চারটি ব্লকের বসিন্দাদের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড তুলে দেওয়া হবে৷ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত অন্ত্যদয় অন্নপূর্না যোজনায় বাঁকুড়ার আশি হাজার পরিবারকে ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। ওই পরিবারগুলির প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৭৫ জন এই প্রকল্পের সবিধা পাচ্ছেন। পায়োরিটি হাউস হোল্ড অর্থাৎ পিএইচএইচয়ের ক্ষেত্রে রেশন কার্ড পেয়েছেন ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪৩ জন এবং এসপিএইচএইচের ক্ষেত্রে রেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে ১১ লাখ ৮২ হাজার ১৭৩ জনকে। বাঁকুড়ায় রায়পুর, রানিবাঁধ, সারেঙ্গা, সিমলাপালের বাসিন্দারা এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড হাতে পাননি৷ সূত্রের খবর, উনিশের লোকসভার আগেই তাঁদের হাতেও ডিজিটাল রেশন কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে। এমনই নির্দেশে এসেছে রাজ্যের শীর্ষমহল থেকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.