সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগু করার মতো কেন্দ্রের অমানবিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে মানবিক প্রতিবাদ। আইনটি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সেই প্রতিবাদ চলবে। মধ্যমগ্রামে CAA বিরোধী সভায় একথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনে আরও শান দিতে শুক্রবার থেকে রানি রাসমনি রোডে ধরনা কর্মসূচি শুরু করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সেকথাও এদিন ঘোষণা করেছেন মমতা। এরপর CAA’র বিরোধিতায় মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসতের কাছারি ময়দান পর্যন্ত পদযাত্রায় শামিল হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনে সারিতেই চোখে পড়ল বিশাল মহিলা বাহিনীর যোগদান। সঙ্গে কাঁসর-ঘণ্টা।
CAA এবং NRC বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে সর্বত্র, রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে। সেই লক্ষ্যেই বছরের শেষদিক থেকে বিভিন্ন জায়গায় সভা, পদযাত্রা শুরু করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সময় যত যাচ্ছে সেই আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। শহর কলকাতা ছাড়াও জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া, উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে এভাবে মিছিল করে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে চেয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে গিয়ে আন্দোলনে শামিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসত – পদযাত্রা শুরুর আগে চৌমাথার কাছে একটি সভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেখান থেকে তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অমানবিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানবিক আন্দোলন চলবে।
সরব হন মতুয়াদের নিয়েও। বলেন, ”মতুয়ারা আগে থেকেই ভারতের নাগরিক। তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নাম করে ভুল বোঝানো হচ্ছে। কেন আলাদা করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে?” কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও বক্তব্য, ”নতুন আইন অনুযায়ী, এনপিআর-এর ফর্ম ভরতে গেলে মায়ের জন্মতারিখ, সার্টিফিকেটও লাগছে। কিন্তু কতজনের কাছে মায়ের জন্ম সার্টিফিকেট রয়েছে?”
মধ্যমগ্রামের সভা থেকে বুধবার বাম-কংগ্রেসের যৌথভাবে ডাকা সাধারণ ধর্মঘটেরও সমালোচনা করেন মমতা। বলেন, ”CAA বিরোধী আন্দোলনের নামে কেউ কেউ তাণ্ডব চালিয়েছে। বাসে, ট্রেনে আগুন ধরিয়েছে। পুলিশের গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এসব বরদাস্ত করা যায় না। ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে কেউ কেউ। আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক ভেদাভেদ থাকবে না। সঠিক পথে, শান্তিপূর্ণভাবে তা করতে হবে। বাংলায় CAA-NRC বিরোধিতার কথা সারা দেশ জেনেছে।” বুধবার দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটে বাম-কংগ্রেস কর্মীদের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার জেরে তিনি ১৩ তারিখ দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত থাকছেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। মধ্যমগ্রাম থেকেও রাজ্যের বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি যৌথ আন্দোলনের রাস্তাও খোলা রাখলেন।
ছবি: পিন্টু প্রধান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.