কিংশুক প্রামাণিক, দার্জিলিং: পাহাড়ের নয়া পর্যটককেন্দ্র হবে লালকুঠি। জিটিএ-র সঙ্গে বৈঠকের পর ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দার্জিলিংয়ে উন্নয়নের জন্য একটি বিশেষ কমিটিও গড়ে দিয়েছেন তিনি। কমিটির মুখ্য পরামর্শদাতা বিনয় তামাং। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নয়া কমিটি নেতৃত্বে নতুন দার্জিলিং গড়ে তোলা হবে। খুব তাড়াতাড়ি কমিটি গড়া নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে সরকার।
মঙ্গলবার সকালে উঠেই দার্জিলিং পরিক্রমা মমতার। মঙ্গলবার রিচমন্ড হিল থেকে বেরিয়ে রাজভবন হয়ে ম্যাল ঘুরে সার্কিট হাউসের রাস্তা ধরে সোজা হিলটপে লালকুঠি। প্রায় পাঁচ-ছয় কিলোমিটার পথ অবলীলায় হেঁটে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যবেক্ষণ করলেন গোটা শহরকে। কোথায় কী করতে হবে, কীভাবে তাকে সাজাতে হবে, তার নির্দেশ দিতে দিতেই এগিয়ে চলা। যেমন চৌরাস্তা থেকে ম্যালে প্রবেশের মূল রাস্তাটির অবস্থা অবর্ণনীয়। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন, আজকেই জিটিএর বৈঠকে আলোচনা হবে। অবিলম্বে পেভার ব্লক পেতে সাজানো হবে রাস্তাটা। সৌন্দর্যায়ন হবে গোটা এলাকার। কারণ শান্তি ফিরে আসায় পাহাড়ে এবার ইতিমধ্যেই রেকর্ড বুকিং হয়ে গিয়েছে। কার্যত মহালয়ার পর থেকে লক্ষ্মীপুজো, এমনকী কালীপুজো-দীপাবলিতেও পাহাড়ের কোনও হোটেলে ঘর ফাঁকা নেই। ম্যালের আশপাশ দূরের কথা, ঘুম-বাতাসিয়া লুপ সংলগ্ন এলাকার হোটেল, গেস্ট হাউসও এর মধ্যেই ‘হাউসফুল’। বিষয়টি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছেছে। তাই পুজোর আগে পাহাড়ের সমস্ত রাস্তাঘাট, সংস্কারের পাশাপাশি বিদু্ৎ ও পানীয় জলের পরিষেবা যাতে কোনওভাবে বিঘ্নিত না হয়, তা দেখার জন্য সফরসঙ্গী পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
[ বিজেপির রথযাত্রার আগে প্রচারে ‘রথ’ই ভরসা তৃণমূলের]
লালকুঠিতে পৌঁছে মমতা বিস্মিত। বললেন, ‘এত সুন্দর এলাকা দার্জিলিংয়ে আছে? আমি তো আগে দেখিনি। এইটাকে কেন্দ্র করেই পর্যটনকেন্দ্র গড়া যেতে পারে।’ সঙ্গে ছিলেন আধিকারিকরা। যেই কথা সেই কাজ। ঠিক হয়ে গেল পর্যটন হাব হবে লালকুঠিতে। একসময় গোর্খা হিল কাউন্সিলের সদর দফতর ছিল এই ঐতিহ্যমণ্ডিত লালকুঠি। যদিও তারা ক্ষমতায় এসে কুঠির চালাঘরের রং লাল থেকে সবুজ করে দেয়। আর বাঙালিপ্রীতিতে তো রয়েইছে লালকুঠি সিনেমার কথা।
মুখ্যমন্ত্রীর এই দার্জিলিং পরিক্রমার সাক্ষী থাকল কাঞ্চনজঙ্ঘাও। সকাল থেকেই ঝকঝক করছে আকাশ। উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। ঠান্ডা নেই, গরমও নেই। ভারি সুন্দর দার্জিলিং। পাহাড়ে এখন পর্যটক কম। যদিও আর ১৫ দিন পর থেকেই পর্যটন মরশুম শুরু হয়ে যাবে। পর্যটকরাই হচ্ছে পাহাড়ের লক্ষ্মী। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা দেখার জন্য জিটিএ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার শহর পরিক্রমায় মুখ্যমন্ত্রী অনেকগুলি হেরিটেজ বাড়ি ও হোটেল এলাকা পরিদর্শন করেন। বিকেলে রিচমন্ড হিলে জিটিএর বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিমল গুরুং জামানায় এভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কখনও জিটিএর বৈঠক হয়নি। বিমলরা ব্যক্তিগতভাবে বৈঠকে আসতেন। কিন্তু বিনয় জমানায় মোর্চা অনেক উদার। তাঁরা মমতাকে অভিভাবক হিসাবে সামনে রেখেই চলতে চান।
[ ‘ভুতুড়ে ট্রলার’ থেকে উদ্ধার ৪ হাজার লিটার চোরাই কেরোসিন, জুনপুটে চাঞ্চল্য]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.