সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিয়াল্লিশে-বিয়াল্লিশ যদি চাই তাহলে বহরমপুরও চাই, জঙ্গিপুরও চাই, মুর্শিদাবাদও চাই। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার জনসভায় মমতা যখন এই কথাগুলি বলছেন, তখন হয়তো তিনি নিজেও জানেন এরাজ্যে তাঁর দল বিয়াল্লিশে ৪২ পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে মুর্শিদাবাদ জেলা। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির খাসতালুক। মুর্শিদাবাদে আগের তুলনায় অনেকটাই শক্তিক্ষয় হয়েছে কংগ্রেসের, অনেক শক্তিশালী হয়েছে তৃণমূল। তবু, লোকসভায় অধীর চৌধুরি যে একটা ফ্যাক্টর, তা মানছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও।
তাই অধীরের খাসতালুকে মমতা প্রথমেই আক্রমণ করলেন কংগ্রেসকে। বলা ভাল, নাম না করে অধীর চৌধুরিকে। মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণ খানিকটা অধীর চৌধুরির ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই। বললেন, “বহরমপুরে আর ক’দিন থাকেন, কোথায় থাকেন সে কি জানি না? আমার মুখ খোলাবেন না।” সম্প্রতি লোকসভা প্রার্থীপদের হলফনামায় অধীরবাবু নিজের স্ত্রী হিসেবে অতসী চট্টোপাধ্যায়ের নাম লিখেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হয়তো সেদিকেই ইঙ্গিত করলেন। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর অবশ্য তৃণমূল নেত্রী বেঁধেছিলেন বাম-কংগ্রেস আঁতাতের অভিযোগ করার মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস সিপিএমের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। তাই একে একে কংগ্রেস বিধায়করা আমাদের সঙ্গে আসছেন।’’
আরএসএস-কংগ্রেস আঁতাতের অভিযোগেও এদিন আরও একবার শান দেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন,”বহরমপুর-জঙ্গিপুরে আরএসএস কংগ্রেসের হয়ে কাজ করছে। প্রণববাবু নাগপুরে গিয়েছিলেন। তাই তাঁর ছেলেকে জেতাতে জঙ্গিপুরে আরএসএস কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছে। যারাই সকালে কংগ্রেস, তারাই দুপুরে সিপিএম আর রাতে বিজেপি। রাম আর বাম, আর এখন মাঝখানে শ্যাম এসে জুটেছে। জগাই-মাধাই আর গদাইয়ের জোট হয়েছে।”
এছাড়াও, মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ানও দেন মমতা। বিশেষ করে, মুর্শিদাবাদবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা এদিন মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা।মূলত কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেও চেনা ভঙ্গিতে বিজেপিকেও নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেস যে ব্যর্থ তাও বুঝিয়ে দেন তৃণমূলনেত্রী। তবে, এদিনের জনসভা থেকে মমতা যেভাবে কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট, কেন্দ্রীয় স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূলের যতই সদ্ভাব থাক, এরাজ্যে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.