সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক নয়, তবে এ রাজ্যে থাকতে গেলে ভাষাটা পড়তে হবে। জানতে হবে। মিরিকের সভায় ত্রিভাষা বিতর্কে বিমল গুরুংদের এভাবেই জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুলে বাংলা ভাষা নিয়ে মোর্চাবাহিনী জলঘোলা করার আগেই মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন তাঁর লড়াই উন্নয়ন নিয়ে। মিরিক পুরসভা জয়ে তৃপ্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবগঠিত মহকুমার জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের কথাও ঘোষণা করেন সোমবার।
[হুমকি দিয়ে দার্জিলিংয়ে বোর্ডিং স্কুলও বন্ধ করল গুরুংবাহিনী]
তিন দশকের মিথ ভেঙেছে। পাহাড়ের বাইরের কোনও মূলস্রোতের দল হিসাবে প্রথমবার মিরিক পুরসভা দখল করেছে তৃণমূল। মিরিকের সাফল্যে উদ্দীপ্ত শাসক শিবিরের যেন কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার ছিল। সোমবার মিরিকে গিয়ে সেই কৃতজ্ঞতাই ঝরে পড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। মিরিকবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েই থামা নয়, মিরিকের ভোল পাল্টাতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন তাঁর একাধিক পরিকল্পনার কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মিরিকের বিখ্যাত লেকের সংস্কারে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। শহরকে আলো দিয়ে সাজাতে ১০ কোটি, নিকাশি ব্যবস্থার জন্য ১০ কোটি এবং রাস্তা তৈরিতে ১২ কোটি টাকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন প্রত্যেক মিরিকবাসী এক মাসের মধ্যেই পাট্টা পেয়ে যাবেন। মিরিক ঘিরে উন্নয়নের কথা শুনিয়ে পাহাড়ে তাঁর প্রতিপক্ষ বিমল গুরুংকেও এদিন নরম-গরমে বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা ভাষা নিয়ে পাহাড়ে জল ঘোলানোর চেষ্টা হলে ফল যে ভাল হবে না তা এদিন মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, পাহাড়ে বাংলা বাধ্যতামূলক হবে। এমন কথা প্রশাসন কখনও জানায়নি। গোটাটাই মিথ্যা। ত্রিভাষা ইস্যুতে তাঁর সংযোজন, ‘কেউ তাঁর পছন্দমতো ভাষা পড়তে পারেন, কিন্তু সঙ্গে বাংলাও পড়বে। বাংলায় থাকলেও বাংলা ভাষাটাও জানা দরকার।’
[গোবর-গোমূত্রে তৈরি সাবান, শ্যাম্পু অনলাইনে বিক্রি করবে RSS]
নেপালিদের সঙ্গেও যে রাজ্য রয়েছে তা বোঝাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নেপালি ভাষা সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষা নেপালি ভাষায় নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, জিটিএ নির্বাচনের আগে অস্থিরতা তৈরি করতেই নেপালি ও বাঙালিদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চলছে। মিরিকের জনসভায় যাওয়ার পথে কয়েকটি জায়গা মোর্চা কালো পতাকায় ঢেকে রেখেছিল। যা দেখে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে ভয় দেখানো যাবে না। মোর্চা নেতৃত্বর নাম না করে মমতা বলেন, ‘এখানকার কিছু নেতা নিজেদের ভগবান মনে করেন। ওর ভগবান নয়, শয়তান।’ জিটিএ হাতে মানেই ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার দিন শেষ। এই বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সরকার থেকে জিটিএ যে টাকা পেয়েছে, তার স্পেশাল অডিট হবে। কাউকেই রেয়াত করা হবে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মিরিকে গিয়ে এক ঢিলে এভাবে অনেকগুলো পাখি মারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিটিএ নির্বাচনের আগে তাঁর মিরিক চালের জবাব কীভাবে মোর্চা দেয় তা নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে পাহাড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.