ফাইল ছবি।
বাবুল হক, মালদহ: চাল, ডাল, আলু, পিঁয়াজ এই প্যাকেজ নিয়েই দুস্থদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন রাজনৈতিক দলের কর্মী থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য প্রায় সকলেই। কিন্তু শুধু এগুলিতে কী সংসার চলে? মাছ, মাংস না হোক সামান্য সবজি ছাড়া তাঁরা খাবেন কী? সেকথা ভেবে অভিনব ব্যবস্থা নিলেন ওল্ড মালদহ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সফিকুল ইসলাম। নিজের ওয়ার্ডেই খুললেন ‘বিনামূল্যের বাজার’।
টাকাকড়ি লাগবে না। ওয়ার্ডের বাসিন্দারা শুধুমাত্র একটি ব্যাগ সঙ্গে আনবেন। আনলেনও। বাজারে যেমন পছন্দমতো সবজি কেনেন ঠিক তেমনই ব্যাগ ভরে বাজার করলেন। বিনা খরচে বাজার! খুশি গিন্নিও। কী নেই সেখানে? চা, চিনি, চাল, আটা, সুজি, বিস্কুট, লবণ, তেল, মশলা, আলু, পিঁয়াজ, লঙ্কা ও সবজি রয়েছে প্রায় সব কিছুই। আর সবই মিলল বিনামূল্যে। একটি টাকাও খরচ করতে হচ্ছে না। এই লকডাউনের বাজারে আমজনতার রুটিরুজি যেখানে বন্ধ হওয়ার উপক্রম সেখানে বিনা পয়সায় জিনিস পেয়ে কার মুখে না হাসি ফোটে?
প্রায় ৮০০ পরিবার বিনামূল্যে বাজার করছে এখানে। লকডাউনের মধ্যে বিনামূল্যে বাজার চালু করে এই সংকটের সময় নজির গড়েছেন পুরাতন মালদহ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সফিকুল ইসলাম। শনিবার সকালে ওই বাজার বসে পুরাতন মালদহ পুরসভা এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুরের মহানন্দা নদী লাগোয়া মাঠে। ওই বাজার পরিদর্শনে যান মালদহ জেলা তৃণমূল সভানেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। দুস্থদের সাহায্য করার এই অভিনব উদ্যোগ দেখে তিনি শুধু খুশি। প্রথমে অবাকও হয়ে যান যথেষ্ট। কারণ, লকডাউনের বাজারে ৮০০ পরিবারের হাতে কুড়ি রকমের জিনিস বিনামূল্যে তুলে দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়! মৌসম বেনজির নূর অভিভূত হয়ে বলেন, “এই বিপদের সময় সফিকুল যেভাবে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাতে আমি খুবই খুশি। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অন্যান্য এলাকাতেও জনপ্রতিনিধিদের এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আবেদন করব।”
পুরাতন মালদহের বিডিও ইরফান হাবিবও ওই বাজার পরিদর্শনে গিয়ে আপ্লুত। স্থানীয় বাসিন্দা নুরেফা খাতুন বলেন, “পরিচারিকার কাজ করে সংসার চলে। লকডাউনের জেরে তা বন্ধ। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আমরা তাতে উপকৃত হলাম। অন্তত না খেতে পেয়ে মরব না। সফিকুল সাহেবের কাছে কৃতজ্ঞ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.