ছবি: প্রতীকী
বাবুল হক, মালদহ: পরকীয়ার অভিযোগে মধ্যযুগীয় ‘শাস্তি’ মালদহের (Maldah) মহিলাকে। ঘর থেকে বের করে তাঁর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। এখানেই থেমে থাকেনি তারা। দাম্পত্য সম্পর্কে ‘বিশ্বাসঘাতক’কে চিহ্নিত করতে মহিলার কপালে লিখে দেওয়া হল – ৪২০! তারপর গ্রামছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে মালদহের চাঁচলে। রবিবার এই অত্যাচারের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতে শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে সোচ্চার মানবাধিকার কর্মীরা।
চাঁচলের (Chanchol) ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাণ্ডরণ বেদে পাড়ার বাসিন্দা কাজলী বেদে। জানা গিয়েছে, বছর দুই আগে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তারপর থেকে ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন কাজলী। কিন্তু গত কয়েকমাসে তাঁর চালচলনে বদল আসে বলে অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের একাধিক পুরুষের সঙ্গে কাজলীর সম্পর্ক (Extra Marital Affairs) তৈরি হয়। মাঝেমধ্যেই নাকি তিনি রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন।
বাড়ির বউয়ের এহেন কীর্তির কথা শাশুড়ি প্রতিবেশীদের জানান। এরপর একটি সালিশি সভা ডাকা হয় গ্রামে। সেখানে কাজলীকে ‘দুশ্চরিত্র’ বলে দেগে দেন সকলে। বাড়ি থেকে কোথাও না বেরনোর ফতোয়া জারি হয়। কিন্তু তা মানতে চাননি কাজলী। পরে ফের বাড়ির বাইরে গেলে, গ্রামবাসীরা হাতেনাতে ধরে ফেলে। অভিযোগ, তারপরই তাঁকে মারধর করে চুল কেটে (Hair Cut) দেওয়া হয়। এখানেই থেমে থাকেনি কেউ। কপালে ৪২০ লিখে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার এই অত্যাচারের ভিডিও (Video) প্রকাশ্যে আসে। দেখা যায়, সবুজ জামা পরা এক যুবক পিছন থেকে ধরে রয়েছে কাজলীকে। আর এক মহিলা তাঁর চুল কেটে কপালে খোদাই করছে – ৪২০।
তারপরই শোরগোল শুরু হয়েছে এলাকায়। মানবাধিকার কর্মীরা প্রতিবাদে সরব। মহিলা কমিশনও ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ‘মধ্যযুগীয় বর্বরতা’র সঙ্গে তুলনা করেছে। যদিও এ বিষয়ে পুলিশে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.