ছবি: প্রতীকী
বাবুল হক, মালদহ: ছেলেকে নিয়ে কাজের খোঁজে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা নেপাল লোহার। মাসদুয়েকের কাজে উপার্জনও খারাপ হয়নি। সম্প্রতি পরিবারের এক সদস্য গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। খবর পেয়ে ছেলে জীবনকে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেন নেপালবাবু। কিন্তু, চলন্ত ট্রেনেই ঘটে বিপত্তি। অভিযোগ, অসমের একদল যুবক চুরির অপবাদ দিয়ে বাবা-ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে। সেইসঙ্গে দড়ি দিয়ে দু’জনকেই ট্রেনের কামরার মধ্যে বেঁধে রাখা হয় বলে অভিযোগ। সুযোগ বুঝে অন্যের মোবাইল ফোন থেকে ঘটনাটি বাড়িতে জানান নেপালবাবু। খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা রেলপুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর বুধবার রাতে তিনসুকিয়া এক্সপ্রেস মালদহ স্টেশনে এসে পৌঁছালে বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ। গণপিটুনির অভিযোগে সহযাত্রী তিন যুবককে আটক করা হয়েছে। এদিকে গণপিটুনিতে জখম বাবা ও ছেলেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার মালাহার গ্রামের বাসিন্দা নেপাল লোহার। মাসদুয়েক আগে ছেলেকে নিয়ে তিনি শ্রমিকের কাজ করতে বেঙ্গালুরু যান। রবিবার বাড়ি ফেরার জন্য তাঁরা বেঙ্গালুরু থেকে তিনসুকিয়া এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় ওঠেন। নেপালবাবু জানান, কামরায় খুব ভিড় ছিল। তাঁর ছেলে ওপরে বাঙ্কে উঠে যায়। সেইসময় তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোনটি নিচে পড়ে যায়। ছেলের ফোনটি খুঁজতে গিয়ে হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন তাঁর পকেটে থাকা মানিব্যাগটি চুরি গিয়েছে। মানিব্যাগে ৬ হাজার টাকা ছিল। তিনি যখন নিজের ব্যাগ খুঁজছিলেন, তখন জীবন তাঁকে জানায়, তার মানিব্যাগও লোপাট হয়ে গিয়েছে। তাতে ছিল ১০ হাজার টাকা। সেইসময় কামরায় থাকা অসমের কয়েকজন যুবক উলটে বাবা-ছেলেকেই চুরির অপবাদ দেয় এবং মারধর শুরু করে। রবিবার রাতভর ওই অবস্থায় থাকার পর সোমবার সুযোগ বুঝে নেপাল কামরার এক যাত্রীর মোবাইল ফোন থেকে বাড়িতে গোটা ঘটনাটি জানান।
মালাহার সংলগ্ন রামপুর গ্রামের বাসিন্দা হামিদুর রহমান জানান, নেপালের বাড়ির লোকজনের মুখে গোটা ঘটনা শুনে তাঁরা বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করতে সচেষ্ট হন। প্রথমে অসমের ওই যুবকদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। কিন্তু, ওই তিন যুবক ফোনে গ্রামবাসীদের সাফ জানিয়ে দেয়, ৮০ হাজার টাকা না পেলে তারা বাবা ও ছেলেকে অসম নিয়ে চলে যাবে। এরপরই নেপালবাবুর পরিবার গোটা ঘটনাটি মালদহ রেলপুলিশে জানান। রেলপুলিশ তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়ে মালদহ স্টেশনেই বাবা ও ছেলেকে উদ্ধার করতে তৎপর হয়। তিনসুকিয়া এক্সপ্রেস নির্দিষ্ট সময়ের দু’ঘণ্টা দেরিতে মালদহে পৌঁছাতেই ওই কামরা থেকে নেপালবাবু ও তাঁর ছেলে জীবনকে উদ্ধার করে পুলিশ। সেইসঙ্গে অসমের ওই তিন যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
[নিরক্ষর আদিবাসী সৌরবির দানের জমিতে গড়ে উঠছে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.