বাবুল হক, মালদহ: এ যেন সর্ষের মধ্যেই ভূত! দূরপাল্লার ট্রেনের এসি কামরায় অ্যাটেন্ডেন্টের দায়িত্বে থাকা ঠিকাশ্রমিকই আসলে ছিনতাইবাজ! রেলের হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করে অভিযুক্তকে ধরিয়ে দিলেন এক মহিলা যাত্রী। মালদহের এই ঘটনায় রেলকর্মীদের একাংশের সঙ্গে রেলদস্যুদের যোগসাজশ থাকার বিষয়টিও প্রকাশ্যে চলে এল।
[১০০ টাকায় পদ্মার ইলিশ! মালদহ জুড়ে মহাভোজ]
১৫৬১৯ আপ গুয়াহাটিগামী গয়া-কামাক্ষা এক্সপ্রেস ট্রেনে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এক মহিলা যাত্রীর গলার হার ছিনতাই করে নিয়ে সেই কামরায় কার্যত সাধুর বেশেই ছিল অভিযুক্ত। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আরপিএফ জওয়ানদের হাতে সে ধরা পড়ে যায়। রেল সূত্রে খবর, ধৃত ওই ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় অ্যাটেন্ডেন্ট হিসাবে কাজ করছিল। নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের অধীনস্থ ঠিকাদার সংস্থার হয়ে কাজ করত অমর তারো (৪০)। এনএফ রেলের মালদহের আরপিএফ ইন্সপেক্টর মেহমুদ আমিন জানান, দূরপাল্লার বাতানুকূল সংরক্ষিত কামরায় সফর করছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক জওয়ানের স্ত্রী। গয়ার বাসিন্দা জানমুনি কুমারী (২৪) নামের ওই মহিলা গয়া-কামাক্ষা এক্সপ্রেসের এসি থ্রি কোচের বি-টু কামরায় ৩৩ নম্বর আসনে ছিলেন। তাঁর স্বামী অসমের গুয়াহাটিতে কর্মরত। ওই ভদ্রমহিলা স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গুয়াহাটি যাচ্ছিলেন। রাত পৌনে বারোটা নাগাদ ট্রেনটি মালদহ টাউন স্টেশন থেকে ছেড়ে উত্তরবঙ্গের দিকে রওনা দেয়। তারপরই স্বমূর্তি ধারণ করে রেলের ওই ঠিকাশ্রমিক। জানমুনিদেবী যখন ঘুমিয়েছিলেন তখন ওই অ্যাটেন্ডেন্ট তাঁর গলা থেকে মঙ্গলসূত্র সমেত সোনার হারটি ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় ঘুম ভেঙে যায় মহিলার। জানমুনিদেবীর সন্দেহ হয় কাজটি ওই অ্যাটেন্ডেন্টই করে থাকতে পারে। এরপর তিনি রেলের হেল্পলাইন ১৮২ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানান। কিছুক্ষণ পর আরপিএফের কর্মীরা ছুটে আসেন। তাঁরা অভিযুক্তকে ধরে জেরা শুরু করে।
[যোনি থেকে রক্তক্ষরণে কীভাবে তরুণীর মৃত্যু, চেতলার ঘটনায় ধন্দে ডাক্তাররাও]
ধৃতের হেফাজত থেকে মহিলা যাত্রীর গলার হার ও মঙ্গলসূত্র উদ্ধার করা হয়। ভোররাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কুমেদপুর স্টেশনে ট্রেন থামলে ধৃতকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেন কর্তব্যরত আরপিএফ টিমের অফিসার সুব্রত দে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ। তবে যাত্রীদের অভিযোগ রেল দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ থাকে রেল কর্মীদের একাংশের। এই ঘটনা তা প্রমাণ করল। ধৃত অমর তারো এর আগে কোনও অপকর্মে যুক্ত ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.