পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে মাদুরে বসে জনসংযোগের কাজ সামলাচ্ছেন মধুময় সরকার।
বাবুল হক, মালদহ: ভোট দিয়ে জনগণ নির্বাচিত করেছেন। সমিতির চেয়ার পেয়েছেন। কিন্তু পণ করেছেন, সেই চেয়ারে তিনি বসবেন না। রীতিমতো মাদুর পেতেই মেঝেতে সরকারি কাজকর্ম করছেন মালদহের হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিজেপির মধুময় সরকার। ওই চেয়ারটিতে তিনি সাইনবোর্ড লাগিয়ে লিখেছেন, সেটি সর্বসাধারণের চেয়ার। জনগণ তাঁকে দিয়েছেন। তিনি জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে কেউ এলে তিনি বসার জন্য অফিসের চেয়ার এগিয়ে দিচ্ছেন।
মালদহের হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের রতিরামপাড়ার বাসিন্দা মধুময় সরকার। তিনি এবার স্থানীয় ২৬ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিজেপির প্রতীকে জয়ী হন। হবিবপুর ব্লকে বিজেপি এককভাবে পঞ্চায়েত সমিতির আসনটি দখল করে। বোর্ড গঠনে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন মধুময় সরকার। ওই পদে নির্বাচিত হওয়ার পরেই সিদ্ধান্ত নেন তাঁর জন্য বরাদ্দ চেয়ারটি জনগণের জন্য উৎসর্গ করবেন। এরপরেই তিনি অফিসে রাখা চেয়ারে ‘হবিবপুর ব্লকের সর্বস্তরের মানুষের অধিকারের আসন’ সাইনবোর্ড রেখেছেন। মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে বসে অফিসের কাজকর্ম করছেন। মধুময়বাবুর এই ব্যবহারে গ্রামবাসীরাও অবাক। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির এমন কর্মসংস্কৃতি নিয়ে হবিবপুরের রাজনৈতিক মহলেও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
গোটা বিষয়টিতে তাঁর দলের কর্মীরাও স্তম্ভিত। সমালোচনা শুরু করেছেন বিরোধীরা । তৃণমূল কংগ্রেসের হবিবপুর ব্লকের যুগ্ম আহ্বায়ক উজ্জ্বল মিশ্র বলেন, “বিজেপির সহ-সভাপতিকে মানুষ নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু বিজেপি কী করছে সেটা সবার জানা আছে। এটা পাগলের পাগলামি ছাড়া কিছুই নয়। এভাবে প্রচারের আলোয় আসা যায় না।” এ বিষয়ে মধুময় সরকার বলেন, “মানুষ বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছেন। নিরক্ষর, গ্রামবাসীদের সবসময় সম্মান দেওয়া হয় না। তাঁদের সম্মান জানাতেই আমার এই চিন্তাভাবনা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.