Advertisement
Advertisement

Breaking News

আম নেই, আমসত্ত্ব দিয়ে আজ মালদহে রাহুলকে বরণ

লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম বঙ্গ সফর।

Malda Congress workers to greet Rahul Gandhi with mango delicacy
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:March 23, 2019 12:25 pm
  • Updated:March 23, 2019 12:25 pm  

রাহুল চক্রবর্তী, মালদহ: সবে মুকুল ধরেছে বাগানের গাছে গাছে। আম এখনও দূর-অস্ত। তাই আমের বদলে আমসত্ত্ব দিয়েই রাহুল গান্ধীকে বরণ করতে চলেছেন মালদহের কংগ্রেস কর্মীরা। দুধের বদলে পিটুলিগোলার মহাভারতীয় উপাখ্যানের একুশ শতকীয় রি-রান যেন! শনিবার মালদহে সভা করবেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম বঙ্গ সফর। মালদহের চাঁচোলে সভার প্রস্তুতি তুঙ্গে। সভা সফল করতে জেলা কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। মালদহ শহর মুড়ে ফেলা হয়েছে কংগ্রেসের পতাকায়। আর সেখানেই উঠে এসেছে আমসত্ত্বের উপাখ্যান। ফাল্গুন পেরিয়ে চৈত্র পড়েছে এই ক’দিন হল। তাই রাহুল গান্ধীকে মালদহের জগৎবিখ্যাত লক্ষ্মণভোগ তো দূরের কথা, মল্লিকা, আম্রপালী, ল্যাংড়া, লক্ষ্মীভোগ– কোনও আমই খাওয়ানোর সুযোগ এ যাত্রায় হচ্ছে না কংগ্রেস কর্মীদের। এর আগে রাহুল মালদহে এলে তাঁকে আম দিয়ে বরণ করা হয়েছে। এবার দুধের স্বাদ মেটাতে হচ্ছে ঘোলে। জেলা কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত, যেহেতু আম পাওয়া যাচ্ছে না, তাই আমসত্ত্ব দিয়ে স্বাগত জানানো হবে সোনিয়া-পুত্রকে। সঙ্গে থাকবে মালদহে তৈরি সুতির পায়জামা-পাঞ্জাবি। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম জানিয়েছেন,

“সাধারণত দিল্লি থেকে দলের কোনও শীর্ষ নেতা মালদহ এলে তাঁকে আম দিয়েই স্বাগত জানানোটাই প্রথা। কিন্তু এবার মালদহের আম এখনও বাজারে আসেনি। গাছেও ফলেনি। তাই আমসত্ত্ব দিয়েই রাহুল গান্ধীকে স্বাগত জানানো হবে। তবে সেই আমসত্ত্ব অবশ্যই মালদহেরই।” কংগ্রেস বিধায়ক আলবিরুনি জুলকারনাইন বলছেন, “সর্বভারতীয় সভাপতিকে আম দিতে পারলাম না। মন খারাপ। কিন্তু মালদহের কিছু জিনিস দিতে তো হবেই। তাই আমসত্ত্বকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।” এদিকে, লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে রাহুলের এবারের রাজ্যসফর রাজনৈতিক দিক থেকে রীতিমত তাৎপর্যপূর্ণ। বিস্তর জলঘোলার পর বামেদের সঙ্গে জোট না হওয়ায় একলা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। আর তারপরই ২০১৪ সালের জেতা চারটি আসন ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ এখন দলের কাছে। মালদহ উত্তর আসনটি শেষ লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিল কংগ্রেস। দলের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন মৌসম বেনজির নুর। তিনি এখন ‘হাত’ ছেড়ে ‘ঘাসফুলে’। এবার তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থীও হয়েছেন এই আসনে। ঘটনাচক্রে মৌসমের জেতা এই উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ছে রাহুল গান্ধীর সভাস্থল। ফলত, মৌসমকে উদ্দেশ্য করে রাহুল নিশ্চিতভাবেই কোনও বার্তা দেবেন, এমনটাই দাবি এলাকার কংগ্রেস কর্মীদের। সঙ্গে তৃণমূল কিংবা বামেদের প্রসঙ্গেও রাহুল কোনও বার্তা বঙ্গ সফরে দেন কি না, সেদিকেও কৌতূহল তুঙ্গে। কংগ্রেস কর্মীদের আশা, এ রাজ্যে কংগ্রসকে শক্তিশালী করতে এই সফরে ঠিকই কোনও ‘ভোকাল টনিক’ দিয়ে যাবেন রাহুল।
রাহুল গান্ধী সভা করে যাওয়ার পরই ওই একই জায়গায় পালটা সভা করতে আসছেন শুভেন্দু অধিকারী। ইঙ্গিতটা স্পষ্ট! দীর্ঘদিনের গড় মালদহে কংগ্রেসকে সিংহাসনচ্যুত করার চেষ্টায় কোনও খামতি রাখছে না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই রাহুল গান্ধী ফিরে যেতে না যেতেই শুভেন্দু অধিকারীর মতো হেভিওয়েট নেতাকে এনে পালটা সভা করানো।

Advertisement

আরও পড়ুন: জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার গম্ভীর

ইংরেজি নতুন বছরের গোড়াতেই ব্রিগেডে সভা করেছে তৃণমূল ও বামফ্রন্ট। তারপরই রাহুল গান্ধীকে দিয়ে শহিদ মিনারে সভা করার পরিকল্পনা নেয় প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু তা সফল হয়নি। এমনকী, অষ্টমীর দিন কলেজ স্কোয়্যারের পুজোয় অঞ্জলি দিতে আসার কথা ছিল রাহুলের। কিন্তু সেখানেও তিনি আসতে পারেননি। ফলত, রাহুলের এবারের সফর নিয়ে বুক বেঁধেছেন কমীরা। সভাস্থলে দু’টি মঞ্চ করা হয়েছে। একটি লম্বায় ৩০ ফুট ও চওড়ায় ১৫ ফুট। অন্যটি লম্বায় ১৭ ফুট ও চওড়ায় ১৫ ফুট। মূল মঞ্চে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বসবেন দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব ও এ রাজ্যের বাছাই করা কয়েকজন নেতা-নেত্রী। থাকবেন প্রাথর্ীরাও। সব মিলিয়ে মূল মঞ্চে মাত্র ১৮ জনের বসার ব্যবস্থা থাকছে। অন্য মঞ্চে বসবেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। কৃষকদের জন্য রাহুলের প্রতিশ্রুতি হোর্ডিংয়ের মাধ্যমে সভাস্থল ছেয়ে দেওয়া হয়েছে। সভা সফল করতে দিনভর মালদহ থেকে চাঁচোলের প্রতিটি গ্রামে টোটোয় করে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন কংগ্রেস কমীরা। তবে সভার মাঠ আয়তনে খুব বেশি বড় নয়। এক লাখ মানুষের জমায়েত হবে বলে দাবি জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের। ইদানীং দেশের বিভিন্ন রাজ্যের জনসভা থেকে রাফাল ইস্যুতেই সরব হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। চড়া সুরে বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। ফলত, আজকের সভাতেও রাহুলের মুখে রাফালের প্রসঙ্গ উঠে আসবে তা স্বাভাবিক। তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাহুল পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কী বলেন? দিল্লি থেকে যে সমস্ত বিজেপি নেতারা রাজ্যে সফর করে গিয়েছেন, তাঁদের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে, বাংলার আইনশৃঙ্খলা খারাপ। রাহুল গান্ধী সেই পথে হাঁটবেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।

আরও পড়ুন: ‘পাকিস্তানে হামলা অনুচিত’, সেনাকে কাঠগড়ায় তুলে বিতর্কে কংগ্রেস নেতা

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement