রাজা দাস, বালুরঘাট: গঙ্গারামপুরে শিক্ষিকার উপর নারকীয় অত্যাচারের ঘটনায় গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত। কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অমল সরকারকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। আজ তাকে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হতে পারে। এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিজেপির কর্মসূচি ছিল গঙ্গারামপুরে। থানার সামনে বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি মহিলা মোর্চার কর্মী, সমর্থকরা। জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হবে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি রাস্তা তৈরি ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত। নন্দনপুর থেকে হাপুনিয়া পর্যন্ত রাস্তা তৈরি কাজ চলছিল। অভিযোগ, নন্দনপুরের বাসিন্দা শিক্ষিকা স্মৃতিকণা দাসের জমির উপর দিয়েই চলছিল ২৪ ফুটের রাস্তা তৈরির কাজ। তাতে একাধিকবার আপত্তি জানান শিক্ষিকা। রাস্তার জন্য জমি দখল না করার আবেদন জানান তিনি। তাতে পঞ্চায়েতের আধিকারিকরা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ করেন স্মৃতিকণা দাস। জমি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে স্মৃতিকণাদেবী ও তাঁর দিদি ধরনায় বসেন। সেইসময়ই স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও তৃণমূলের কর্মীরা তাঁদের নৃশংসভাবে মারধর করে। পায়ে দড়ি বেঁধে টেনেহিঁচড়ে ঘরে নিয়ে যায়। এই অত্যাচারের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। অসুস্থ হয়ে পড়েন স্মৃতিকণা দেবী ও তাঁর দিদি। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁরা গঙ্গারামপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করতে তদন্তে নামে পুলিশ।
ঘটনার পর এলাকায় হইহই শুরু হওয়ার পরই চম্পট দেন মূল অভিযুক্ত অমল সরকার। এলাকার বাইরে গা ঢাকা দেন তিনি। ঘটনার জেরে বাড়িতে থাকতে আতঙ্কিত বোধ করায় জেলা পুলিশের নির্দেশে ওই শিক্ষিকার বাড়ির সামনে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়। কিন্তু তাতেও ভরসা করতে না পেরে পুলিশ কর্মী মোতায়েনের আবেদন জানিয়ে জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হন স্মৃতিকণা দেবী।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়ে যায়। বিশেষত বিজেপি এর বিচার চেয়ে রীতিমত সক্রিয় হয়ে ওঠে। নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি সোজা রাষ্ট্রপতির দরবারে চলে যান দিলীপ ঘোষরা। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারির জন্য চাপ বাড়তে থাকে জেলা পুলিশের উপর। বাড়ে তৎপরতা। শেষমেশ ঘটনার দিন তিনেক পর অভিযুক্ত পঞ্চায়েত উপপ্রধান অমল সরকারকে জালে আনল পুলিশ। কিছুটা স্বস্তিতে নির্যাতিতা শিক্ষিকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.