ছবি: প্রতীকী
শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: চাকুলিয়ার কানকির কিশোর বিশাল সাউয়ের খুনের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই রহস্যভেদ পুলিশের। গ্রেপ্তার করা হল বিশালের স্কুলেরই এক ছাত্রকে। তবে খুনের মোটিভ নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রহস্যের শিকড়ে পৌঁছতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
কী কারণে এই খুন? জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম অমিত বিশ্বাস। এলাকারই এক হিন্দিভাষী যুবকের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তার দিদির। কিন্তু কোনও কারণে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। পরবর্তীতে এক বাঙালি ছেলের সঙ্গে অমিতের দিদির বিয়ে ঠিক হয়। ১৩ ডিসেম্বর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তদন্তকারী সূত্রে খবর, সম্ভবত অমিতের মনে ধারণা তৈরি হয়েছিল যে প্রেমিকের সঙ্গে দিদির বিচ্ছেদে যোগ রয়েছে বিশালের। সেই কারণেই পরিকল্পনা মাফিক খুন করা হয়েছে তাকে। তবে কারণ নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। এদিকে ধৃতের মায়ের দাবি, মেয়ের বিয়ে বন্ধ করতেই তাঁর ছেলেকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কানকি জৈন বিদ্যামন্দিরের দশম শ্রেণির ছাত্র অমিত বিশ্বাস। স্কুল সূত্রে খবর, বরাবরই অন্য ছাত্রদের থেকে আলাদা সে। ছোট থেকেই স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি টাকা নিয়ে স্কুলে আসত। সহপাঠীদের সঙ্গে অশান্তি করত। সব মিলিয়ে তার আচরণে অতিষ্ঠ ছিল ওই স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়া সকলেই। একাধিকবার কাউন্সেলিংয়ের চেষ্টা করা হয় স্কুলের তরফে। ডেকে পাঠানো হয় মাকেও। একটা পরিবর্তন ও তৈরি হয়েছিল তার মধ্যে। কিন্তু লকডাউনে দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার ফলে ফের বদলে যায় অমিত। তবে সে যে এতটা নৃশংস ঘটনা ঘটাতে পারে, তা ভাবতেও পারেননি স্কুলের শিক্ষককরা।
উল্লেখ্য, উত্তর দিনাজপুরের কানকি ফাঁড়ি এলাকার মাটিয়াড়ির বাসিন্দা বিশাল সাউ। সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সে। পড়ত কানকি জৈন বিদ্যামন্দিরে। শনিবার পাবজি খেলার নাম করে বন্ধুরা বিশালকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আর বিশালের খোঁজ মেলেনি। রাত হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি কিশোর। পরিবারের সদস্যরা এলাকায় খোঁজাখুঁজি করলেও কোনও লাভ হয়নি। রবিবার সকালে বাড়ির রান্নাঘরের পিছনে পরিত্যক্ত এলাকা থেকে উদ্ধার হয় ক্ষতবিক্ষত দেহ। ওই যুবককে খুনের অভিযোগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে অমিতকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.