ছবি: প্রতীকী
সৈকত মাইতি, তমলুক: নামী সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা! আর সেই প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে নন্দকুমারের এক কলেজ ছাত্রী খোয়ালেন তাঁর সঞ্চিত স্কলারশিপ-সহ কন্যাশ্রীর টাকা। সাইবার প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায় তীব্র চাঞ্চল্য পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার।
ওই পড়ুয়া মহিষাদল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। নন্দকুমারের শীতলপুর এলাকার বাসিন্দা। বাবা পেশায় দিনমজুর। অভাবের সংসার সামাল দিতে দায়ভার একটু একটু করে নিজের কাঁধে নেওয়ার চেষ্টা করছিল বছর কুড়ির কলেজ পড়ুয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি তাই চাকরির চেষ্টা করছিলেন তিনি। আর সেটাই যেন কাল হল। অভিযোগ, চলতি মাসের ৫ তারিখ প্রথম শ্রেণির একটি সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেন। আর সেখানেই ব্যাংকের চাকরির নামে প্রতারকদের খপ্পরে পড়েন। তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কন্যাশ্রী এবং স্কলারশিপের সমস্ত টাকা উধাও হয়ে যায়। কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই কলেজ পড়ুয়া।
সর্বস্বান্ত হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণীর অভিযোগ, ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে অনলাইন ফর্ম ফিলাপের নামে প্রথম পর্যায়ে ৩ হাজার ৩০১ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। এভাবেই ধাপে ধাপে প্রভিশনাল অফার লেটারের নামে ২৮৯০ টাকা, ক্লিয়ারেন্স লেটারের নামে ১০ হাজার ২০০ টাকা, এনওসি’র জন্য ১৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের নামে আরও প্রায় ২২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। কিন্তু তারপরেও কোন চাকরি মেলেনি বলে অভিযোগ। উলটে আরও প্রায় ২৪ হাজার টাকা দাবি করে প্রতারকেরা।
অবশেষে প্রায় সর্বস্ব খুইয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয় নন্দকুমারের ওই কলেজ পড়ুয়া। কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই কলেজ ছাত্রী। বলেন, “অভাবের সংসার সামাল দেওয়ার জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি আমার চাকরির খুবই প্রয়োজন ছিল। তাই সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন দেখে আমি নিজেই যোগাযোগ করেছিলাম। অনলাইনে নানাভাবে প্রতারণা হয় তা আমি আগেই জানতাম। কিন্তু প্রথম সারির সংবাদপত্রে ওই বিজ্ঞাপন দেখে যে এভাবে সর্বস্বান্ত হতে হবে তা আগে কখনও ভাবিনি।” তাঁর দাবি, “কন্যাশ্রী, স্কলারশিপ এবং মায়ের গয়না বিক্রি করে ওই টাকা পেয়েছিলাম। এখন সর্বস্ব হারিয়ে আমার পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। কলেজ যাওয়ার খরচটুকুও আর হাতে নেই।” এ বিষয়ে জেলার সাইবার থানার আধিকারিক বিপ্লব হালদার জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.