সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: বালিকা বিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু এলাকায় বেড়ে ওঠা অসাধু চক্রের মাধ্যমে বেআইনিভাবে বিক্রি হয়ে যাচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ওই বিদ্যালয়ের জমিই৷ যা রুখতে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন শ্যামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক প্রয়াত শিশির কুমার সেনের স্ত্রী দেবশ্রী সেন৷ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি মারফত সমগ্র ঘটনা জানালেন তিনি৷ অভিযোগ করলেন, অনন্তপুর এলাকায় বেড়ে ওঠা অসাধু চক্রের সহযোগিতায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয়ের জমি৷ এবং সেখানে বেআইনি নির্মাণ তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছেন তিনি।
[ আরও পড়ুন: স্মারকলিপি দেওয়া ঘিরে এবিভিপি-টিএমসিপি সংঘর্ষ, রণক্ষেত্র দুর্গাপুর সরকারি কলেজ ]
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে দেবশ্রীদেবী অভিযোগ করেন, একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তির মদতে কিছু মানুষ ওই এলাকায় নকল দলিলের সাহায্যে বেআইনি নির্মাণকার্য চালাচ্ছেন। এবং একাধিক ব্যক্তি বিদ্যালয়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ওই জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন। এ কাজের পিছনে এলাকার একটি প্রমোটিং চক্রের হাত রয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন এলাকার প্রাক্তন বিধায়কের স্ত্রী। তিনি দাবি করেন, ওই এলাকায় একটি বালিকা বিদ্যালয় হলে আশপাশের তিন-চারটি স্কুলের উপর থেকে চাপ অনেকটাই কমবে। স্থানীয় বাসিন্দা সৌমেন গুড়িয়া জানান, ১৪.৩২ একর জমির মধ্যে ৬.১৭ একর জমি রয়েছে স্থানীয় অনন্তপুর টেক্সটাইল মিলের অধীনে। বাকি ৮.১৫ একর অর্থাৎ ২৪.৪৫ বিঘা জমিতে স্কুল, সরকারি আবাসন অথবা সরকারি অন্যান্য কোনও প্রকল্প করার কথা ছিল৷ কিন্তু অসাধু চক্রের দাপাদাপিতে তা বন্ধের পথে৷ তাঁর অভিযোগ, বেআইনি ভাবে ওই জমি বিক্রির চেষ্টা করছে ওই চক্র৷ ফলে সরকারি কাজে ওই জমিকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা ক্রমশই ক্ষীণ হয়ে আসছে।
[ আরও পড়ুন: ট্রলি ব্যাগে মিলল দম্পতির দেহ, চাঞ্চল্য নরেন্দ্রপুরে ]
দেবশ্রী সেনের অভিযোগ, সমস্ত বিষয়টা স্থানীয় বিধায়ক, বিএলআরও, শ্যামপুর থানা-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে জানালেও কোনও কাজ হয়নি৷ প্রশাসনিক অফিসারদের নির্লিপ্ত স্বভাবের জন্য এলাকায় অবৈধ দখলদারি ও নির্মাণকাজ বন্ধ করা যাচ্ছে না। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করছেন স্থানীয় বিধায়ক কালিপদ মণ্ডল৷ বলেন, বেআইনি নির্মাণের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। মিলের খরিদকৃত জায়গার বাদে অবশিষ্ট জায়গা ফাঁকা অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। সেখানে গ্রামের ছেলেরা ফুটবল খেলে। এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘অনন্তপুরের চারপাশে বেলপুকুর, অনন্তপুর, ডিহিমণ্ডলঘাট এবং হোগলাসিতে চারটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে৷ কিন্তু এরপরেও ওখানে স্কুল গড়ার কোনও প্রয়োজন নেই।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৮’র পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শ্যামপুর থানার অনন্তপুর টেক্সটাইল মিল সংলগ্ন ওই জমিটিতে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ার শরৎ সদনে আয়োজিত ওই প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শ্যামপুরের বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক কালিপদ মণ্ডলও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.