ছবি: প্রতীকী
দীপালি সেন: করোনা ভাইরাসের পর এবার রাজ্যে অ্যাডিনো ভাইরাস (Adenovirus) আতঙ্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। আগামীকাল, বৃহস্পতিবার শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। অংশগ্রহণ করতে চলেছে প্রায় সাত লক্ষ পরীক্ষার্থী। ভাইরাসের বাড়বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখে প্রথম থেকেই সতর্ক মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ‘সিক রুম’, স্বাস্থ্যকর্মী তো থাকছেই। জোর দেওয়া হয়েছে সচেতনতার উপরেও। এদিকে মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনই পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দিয়েছে জিটিএ বিরোধীরা।
পাহাড়ের পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের স্বার্থে ওইদিন বন্ধ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর আবেদন,‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik) শুরুর দিনে বন্ধ ডাকাটা সমীচীন নয়। পাহাড়ের ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা দিতে যেতে সমস্যা হতে পারে। যাঁরা বন্ধ ডেকেছেন, আপনারা অনুগ্রহ করে প্রত্যাহার করুন।’’ যদিও সমগ্র পরীক্ষা ব্যবস্থাকে বন্ধ কর্মসূচির বাইরে রাখা হবে বলে পর্ষদ সভাপতিকে আশ্বস্ত করেছেন আন্দোলনকারী নেতা বিনয় তামাং। এবছর পাহাড়ে প্রায় ৯ হাজার ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক দেবে। পরীক্ষা শুরুর দিনেই পাহাড়ে বন্ধ কর্মসূচিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য প্রশাসন ও দফতরের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে একজনও পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা না দেওয়ার মতো পরিস্থিতি না তৈরি হয়। সকল পরীক্ষার্থীই পরীক্ষা দিতে পারবেন বলেই আমার আশা।’’ এদিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির সঙ্গে ফোনে কথা হয় বিনয় তামাংয়ের। পরীক্ষার্থী বা পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্তদের যাতায়াতে কোনও রকম বাধা দেওয়া হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছেন। বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘যে কোনও সমস্যা হলে তার সমাধানও থাকে। পাহাড়ে কোনও সমস্যা হলে নিশ্চয়ই কথাবার্তার মাধ্যমে তার সমাধান হবে।’’
পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরে মালবাহী গাড়ি নিষিদ্ধ করেছে কলকাতা পুলিশ। পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজন বুঝলে মাধ্যমিকের দিনগুলিতে যে কোনও রুটের গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে পারেন কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিয়ে বিশেষভাবে সচেতন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। প্রতিটি কেন্দ্রে ‘সিক রুমে’র ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকবেন দু’জন করে স্বাস্থ্যকর্মী। সচেতন থাকতে বলা হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্র নয়, এমন সব স্কুলের প্রধানদেরও। পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে। যেখানে দু’মাস আগে পরীক্ষাকেন্দ্র হিসাবে নির্বাচিত ২৮৬৭টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ২০০টি স্কুলে সিসিটিভি ছিল, সেখানে ইতিমধ্যেই ২৭৯৫টির মতো স্কুলে সিসিটিভি লাগানো হয়ে গিয়েছে। যে স্কুলগুলি নিজে লাগাতে পারেনি, সেখানে পরীক্ষার দিনগুলির জন্য সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে।
মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করা হবে মে মাসের শেষ সপ্তাহে। এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭২৪। এছাড়া, শেষ মুহূর্তে পরীক্ষার বসার ইচ্ছাপ্রকাশ করা ছাত্র-ছাত্রীদেরও অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করছে পর্ষদ। ইতিমধ্যেই এরকম প্রায় সাড়ে ৩০০ ছাত্র-ছাত্রীকে দেওয়া হয়েছে অ্যাডমিট কার্ড। রামানুজবাবু বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে চাইছে, কিন্তু দিতে পারছে না এমন কোনও ঘটনা ঘটবে না।’’ সব পরীক্ষাকেন্দ্রের উপর কেন্দ্রীয়ভাবে অ্যাপের মাধ্যমে নজরদারি চালাবে পর্ষদ। অ্যাপটি ব্যবহার করে রিপোর্ট পাঠাবেন অতিরিক্ত ভেন্যু সুপারভাইজাররা। কোনও জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের আবেদন জানানোর পরিকল্পনা পর্ষদের নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.