সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা কুলপির নিশ্চিন্তপুরে। মঙ্গলবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় শিল্পা মিস্ত্রি নামে ওই ছাত্রীর। বিষ খেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক অনুমান চিকিৎসকদের। পরিবারের অনুমান, প্রেমঘটিত জটিলতার কারণে শিল্পা আত্মহত্যার পথে হেঁটেছে। প্রকৃত ঘটনা জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শিল্পা মিস্ত্রি। মঙ্গলবার বাড়ির কাছেই নিজের স্কুল নিশ্চিন্তপুর রাখালদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিল। সন্ধেবেলা অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে। তারপর বারবার বমি করতে থাকে শিল্পা। চিন্তিত হয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে সঙ্গে সঙ্গে তাকে কুলপি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করেন। কিন্তু রাতে শিল্পার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকলে, চিকিৎসকরা তাকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। বুধবার ভোরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ইঞ্জেকশনের পরই শিশুমৃত্যুর অভিযোগ, কাঠগড়ায় হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স
মৃত ছাত্রীর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের অনুমান, শিল্পার সঙ্গে কোনও যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কে তৈরি হয় জটিলতা। যুবকের কাছ থেকে কোনওভাবে আঘাত পেয়েছিল শিল্পা। সেই আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আর সেই কারণেই বিষ খেয়ে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ওই ছাত্রী কোথা থেকে বিষ পেল, সেই সূত্র খুঁজছে পুলিশ। কেনই বা বাড়ির বাইরে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করল, তাও এখনও স্পষ্ট নয়। কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি এখনও পর্যন্ত। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃতার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এদিকে, মাধ্যমিক পরীক্ষার মাত্র এক সপ্তাহ আগে বাড়ির মেয়ের এই পরিণতিতে রীতিমতো স্তম্ভিত মৃত ছাত্রীর পরিবার। এত শোকেও চাপা পড়ছে না বিস্ময়। শোকাহত মৃত ছাত্রীর স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারা। হতবাক পাড়া প্রতিবেশীরাও। স্থানীয় বাসিন্দা বিজয় প্রামাণিক জানিয়েছেন, শিল্পাকে তাঁরা ছোটবেলা থেকেই চেনেন। একটু জেদি প্রকৃতির মেয়ে ছিল সে। কিন্তু তার জন্য এভাবে নিজেকে শেষ করে দিতে পারে, তা ভাবতেও পারেননি তাঁরা।তবে তাঁদের অনেকের অনুমান, হয়তো জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার চাপ নিতে প্রস্তুত ছিল না শিল্পা। অকৃতকার্য হওয়ার আগাম আশঙ্কায় জীবন থেকে পালিয়ে যেতে চেয়েছে বলেও মনে করছেন। তবে প্রকৃত ঘটনা কী, তা একমাত্র তদন্ত শেষেই বোঝা যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.