দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: প্রেমিককে দিয়ে স্বামী তৃণমূলকর্মী সমীর মিস্ত্রিকে খুন করিয়েছেন বলে অভিযোগ। আর এবার পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন আত্মহত্যার চেষ্টা করল সোনারপুরের মধুমিতা মিস্ত্রি। জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে জেলের শৌচাগারে গলায় ধারালো ধাতব পাত চালিয়ে দেয় ওই গৃহবধু। গুরুতর আহত অবস্থায় এখন এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভরতি মধুমিতা। তার গলায় দুটি গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সকলের নজর এড়িয়ে কীভাবে জেলের ভিতরে এই কাণ্ড ঘটাল ওই মহিলা বন্দি? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
[সোনারপুরেও মনুয়া কাণ্ডের ছায়া, প্রেমিকের সঙ্গে মিলেই তৃণমূল নেতাকে খুন স্ত্রীর]
দুই ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী মধুমিতাকে নিয়ে সোনারপুর থাকতেন সমীর মিস্ত্রি। পেশায় ট্যাক্সিচালক হলেও, তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। গত ১১ এপ্রিল রাতে নিজের বাড়িতেই গুলিতে খুন হন সমীরবাবু। ঘটনার দিন রাত এগারোটা নাগাদ খেতে বসেছিলেন ওই তৃণমূলকর্মী। বাড়ির দরজা খোলাই ছিল। আমচকাই বাড়ির বাইর থেকে গুলি চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সমীর মিস্ত্রির। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের মনে হয়েছিল, পুরনো কোনও শক্রতার কারণেই সমীরবাবুকে খুন করা হয়েছে। স্ত্রী মধুমিতার আচরণও সন্দেহজনক ছিল না। কিন্তু, তার ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখার পরই তদন্তে অন্যদিকে মোড় নেয়। চন্দন মণ্ডল নামে এক যুবকের হদিশ পান তদন্তকারীরা। জানা যায়, চন্দনের সঙ্গে বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল মধুমিতার। ঘটনার দিন দুয়েক আগে বারুইপুরে এক আইনজীবীর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদ নিয়ে কথাও বলতে গিয়েছিল দু’জনে। শেষপর্যন্ত, সমীর মিস্ত্রিকে খুন করার পরিকল্পনা করে স্ত্রী মধুমিতা ও তার প্রেমিক চন্দন। সমীরবাবু যখন রাতে খেতে বসেছিলেন, তখন বাড়ির দরজা খোলা রেখেছিলেন তাঁর স্ত্রীই। খোলা দরজা নিয়ে ওই তৃণমূলকর্মী নেতা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল চন্দন। চন্দন ও মধুমিতাকে গ্রেপ্তার করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় স্বামীকে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে মধুমিতা। আর এবার পুলিশ হেফাজতে নিজেকেও শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করল সে।
[স্বামীর রিভলভার চুরি করে প্রেমিকের হাতে তুলে দেয় মধুমিতাই!]
জানা গিয়েছে, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন কোনওভাবে একটি ধারালো ধাতব পাত জোগাড় করেছিল মধুমিতা। রবিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ জেলের শৌচাগারে গিয়ে ওই ধাতব পাতটি নিজের গলায় চালিয়ে দেয় ওই মহিলা বন্দি। বিষয়টি নজরে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। তড়িঘড়ি মধুমিতাকে নিয়ে যাওয়া হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। গলায় দু’দুটি ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এদিকে, জেলের সকলের নজর এড়িয়ে কীভাবে এই কাণ্ড ঘটাল মধুমিতা? ধাতব পাতই কীভাবে জোগাড় করল এই মহিলা বন্দি? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শোনা যাচ্ছে, মধুমিতার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের শাস্তি হতে পারে।
[রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে নিখোঁজ কর্মী, ক্ষতিপূরণ না মেলায় অসহায় স্ত্রী এখন পরিচারিকা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.