Advertisement
Advertisement

Breaking News

Madarihat

দুই ভূমিপুত্রের লড়াই মাদারিহাটে, উপনির্বাচনে বিজেপির গড় ছিনিয়ে নিতে পারবে তৃণমূল?

উপনির্বাচনের প্রচারে চা বলয়ের জনপ্রিয় বিজেপি নেতা জন বার্লার নিষ্ক্রিয়তা প্রার্থীর পক্ষে প্রতিকূল হতে পারে বলে আশঙ্কা।

Madarihat By-Election: A brief preview on fight between TMC and BJP on November 13
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 9, 2024 7:17 pm
  • Updated:November 9, 2024 7:26 pm  

রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা থেকে সাংসদ। চব্বিশের নির্বাচনে চা বলয়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। বিগত লোকসভা ভোটে মাদারিহাট বিধানসভা এলাকায় ১১,০৬৩ ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আবার লোকসভায় বিজেপির জয়ী প্রার্থী মনোজ টিগ্গার বাড়ি এই মাদারিহাটেই। মনোজ মাদারিহাটের বিধায়ক ছিলেন। লোকসভা আসনে জয়ী হওয়ায় বিধায়ক পদ খালি হয়ে গেছে। আর সেই কারণে এই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে আগামী ১৩ নভেম্বর। উত্তরবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত চা বলয়ে গত কয়েকবছর ধরেই গেরুয়া শিবিরের দখলে। এবারও কি গড় রক্ষা হবে? নাকি পদ্মবনে ঝড় তুলবে তৃণমূল? উপনির্বাচনের লড়াই কেমন হবে? এই প্রতিবেদনে রইল তারই উত্তর খোঁজার চেষ্টা।

গোটা বীরপাড়া-মাদারিহাট ব্লক ছাড়াও জলপাইগুড়ি জেলার সাকোয়াঝোরা ও বিন্নাগুড়ি – এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত মাদারিহাট বিধানসভার অন্তর্ভূক্ত। এর আওতায় রয়েছে টোটোপাড়াও। মোট ভোটার সংখ্যা ২২ লক্ষ ১০১ জন। চতুর্মুখী লড়াই হলেও তৃণমূল আর বিজেপিই যুযুধান প্রতিপক্ষ। তৃণমূল প্রার্থী এখানে জয়প্রকাশ টোপ্পো। বুথ স্তর থেকে উঠে আসা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ছেলে জয়প্রকাশ ২০২১ সাল থেকে দলের ব্লক সভাপতি রয়েছেন। ব্লক সভাপতি হিসেবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোট ও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে দলকে পরিচালিত করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ফলে জয়প্রকাশকে প্রার্থী পেয়ে খুশি তৃণমূল শিবির। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইকের কথায়, “উপনির্বাচনে দল জেপিকে প্রার্থী করেছে। আমরা খুশি। জয়প্রকাশ বুথ স্তর থেকে উঠে আসা নেতা। আমরা গোটা জেলা মাদারিহাটে পড়ে থেকে নির্বাচন করব। মাদারিহাটে আমাদের জয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।”

Advertisement
Jayprakash-Toppo
মাদারিহাটের তৃণমূল প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পো।

অন্যদিকে, বিজেপিও উপনির্বাচনের লড়াইয়ে মাঠে নামিয়েছে ভূমিপুত্র রাহুল লোহারকে। তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক রয়েছে। বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহারের বাবা তারকেশ্বর লোহার সিটু নেতা ছিলেন। বীরপাড়ার দলগাঁও চাবাগানের এই সিটু নেতার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের অত্যাচার করার অভিযোগ ছিল। ২০০৩ সালের ৬ নভেম্বর ক্ষুব্ধ চাবাগানের শ্রমিকরা দলবদ্ধভাবে তারকেশ্বর লোহারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেদিন তারকেশ্বর লোহারের বাড়িতে থাকা ১৯ জন আগুনে পুড়ে মারা যান। কোনওক্রমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন তারকেশ্বর লোহার। ওই ঘটনার দুবছর আগেই তারকেশ্বর লোহারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সেই তারকেশ্বরের রাহুল দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি কর্মী ও নেতা। বুথ স্তর থেকে উঠে আসা রাহুল বর্তমানে বিজেপির মাদারিহাট ১ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি। তাঁকে ভর করেই মাদারিহাটে গেরুয়া গড় রক্ষার চেষ্টায় মরিয়া বিজেপি।

মনোনয়ন পেশের সময় বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহারের সঙ্গী সুকান্ত মজুমদার, রাজু বিস্তা, মনোজ টিগ্গা। নিজস্ব চিত্র।

এদিকে, বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে চা বলয়ের জনপ্রিয় আদিবাসী নেতা, প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লার নিষ্ক্রিয়তা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। চব্বিশের লোকসভার টিকিট না দেওয়ায় সেই যে বিরোধ শুরু হয়েছিল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লার সঙ্গে সেই বিবাদ এখনও মেটাতে পারেনি বিজেপি। আর তার জেরে মাদারিহাট বিধান সভার উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে এখনও দেখা যায়নি জন বার্লাকে। তা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। যদিও প্রকাশ্যে বিষয়টি স্বীকার করছেন না বিজেপির নেতারা। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহার বলেন, “জনদা আমাদের নেতা। উনি দলেই আছেন। দলের কাজ করছেন। ওঁর ব্যক্তিগত কিছু ব্যস্ততাও রয়েছে। সেই কারণে উনি প্রচারে প্রকাশ্যে নামেননি। তবে বাড়িতে বসেই উনি প্রচার চালাচ্ছেন।” এসবের মাঝে দুই তৃণমূল নেতার বার্লার বাড়ি যাওয়া নতুন করে জল্পনা উসকে দিয়েছে। এসব উপেক্ষা করে অবশ্য স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রাহুল যোগ্য প্রার্থী, মাদারিহাট বিধানসভা জিতবে তারাই।

john-barla
চা বলয়ের জনপ্রিয় নেতা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লা। ফাইল ছবি।

মাদারিহাট বিধানসভা উপনির্বাচনে বামেদের প্রার্থী শরিক আরএসপি-র পদম ওরাওঁ। আর কংগ্রেসের হয়ে লড়বেন বিকাশ চম্প্রমারি। তবে তাঁরা ভোটযুদ্ধে তেমন ফ্যাক্টর হতে পারবেন না বলেই মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। ফলে এখানে মূল লড়াইয়ে জয়প্রকাশ টোপ্পো ও রাহুল লোহার। একদিকে, মাদারিহাটের গেরুয়া গড় রক্ষা যেমন রাহুল লোহারের কাছে চ্যালেঞ্জের, তেমনই তা ছিনিয়ে উত্তরবঙ্গে ঘাসফুলের বিস্তার ঘটানো কঠিন পরীক্ষা জয়প্রকাশের কাছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement