রাহুল চক্রবর্তী: ‘গোপাল’ নেই। আছেন শুধুই ‘মদন’! অর্জুনকে হারাতে তৈরি তৃণমূলের পুরনো সৈনিক। একটু স্পষ্ট করে বলা যাক। লোকসভা নির্বাচনের পরিসরের মধ্যেই সপ্তম দফায় হাইভোল্টেজ ম্যাচ হতে চলেছে ভাটপাড়ায়। সেয়ানে সেয়ানে লড়াই! ১৯ মে ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। যেখানে খাতায়কলমে বিজেপির প্রার্থী পবনকুমার সিং। কিন্তু কার্যত পুত্র পবনের বকলমে বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন তৃণমূল হেভিওয়েট অর্জুন সিং-ই লড়ছেন পোড়খাওয়া তৃণমূল নেতা মদন মিত্রর বিরুদ্ধে। থুড়ি, মদনগোপাল মিত্রর বিরুদ্ধে।
মদনের নামের সঙ্গে যে ‘গোপাল’ জড়িয়ে আছে, তা জানা গিয়েছিল আলিপুর আদালতে মামলা চলাকালীন। তখনই প্রকাশ্যে আসে রাজ্যের প্রাক্তন ক্রীড়া ও পরিবহণমন্ত্রীর পুরো নাম মদনগোপাল মিত্র। শুনানির সময় তাঁর পুরো নামই বার বার উল্লিখিত হয়েছে। গুগলে গিয়ে ওই মামলার তথ্য সার্চ করলেও বেরিয়ে আসছে ‘গোপাল’ যুক্ত মদনের নাম। তবে তামাম বাংলা তাঁকে একডাকে চেনে মদন মিত্র হিসেবেই। এক্ষেত্রে ‘গোপাল’-টা উহ্য। “অন্নপ্রাশনের সময় আমার নাম ছিল মদনগোপাল মিত্র। গুরুস্থানীয় একজন এই নাম দিয়েছিলেন।”– জানালেন মদনবাবু। ভাটপাড়ার উপ নির্বাচনে কমিশনের তথ্য বলছে, তৃণমূল প্রার্থীর নাম মদন মিত্র। তাঁর নামের মাঝে ‘গোপাল’ নেই। উপনির্বাচনে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে চার জন প্রার্থী স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের। বাকি আট জন নির্দল। কংগ্রেসের প্রার্থী খাজা আহমেদ হুসেন, সিপিএম প্রার্থী রঞ্জিতকুমার মণ্ডল। কিন্তু লড়াই হচ্ছে তৃণমূলের মদন মিত্রর সঙ্গে বিজেপির পবনকুমার সিংয়ের।
[আরও পড়ুন: মদনের প্রচারে উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান, উত্তেজনা কাঁকিনাড়া বাজারে]
এফিডেভিট কপিতে তৃণমূল প্রার্থী লিখেছেন, নাম- মদন মিত্র। বয়স- ৬৪ বছর। ঠিকানা- ৭ টি এন বিশ্বাস রোড, কামারহাটি, বেলঘরিয়া, ২৪ পরগনা উত্তর, কলকাতা- ৩৫। মদন মিত্রর কাছে এটা কামব্যাকের লড়াই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বেশ কিছুদিন প্রত্যক্ষ রাজনীতির বাইরে থাকার পর ফের নির্বাচনের পরিমণ্ডলে। ২৫ এপ্রিল প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই অর্জুন সিংকে নির্বাচনে হারাতে কোমরবেঁধে নেমে পড়েন তৃণমূলের দাপুটে নেতা। কিন্তু প্রচার পর্বে মদনবাবুর সঙ্গে পাওয়া গেল না ‘গোপাল’ শব্দটা। দাদার সৈনিকরা বলছেন, মদনদা কোনও ভোটেই নামের সঙ্গে ‘গোপাল’ লেখেননি।
কর্মীরা জানালেন, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মদন মিত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কামারহাটি কেন্দ্র থেকে। ৫ এপ্রিল যে এফিডেভিট দাখিল করেন, তাতে নাম ছিল মদন মিত্র-ই। ‘গোপাল’ শব্দ নামের সঙ্গে ছিল না। সেবার কামারহাটি থেকে জিতে মন্ত্রী হন তিনি। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনেও কামারহাটি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মদন মিত্র। তবে ওই নির্বাচনে তিনি হেরে যান। মদনবাবুর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল ভোটে লড়ার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে এফিডেভিট কপি দাখিল করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। সেখানেও ‘মদন’ ছিল। ছিল না ‘গোপাল’। মদনবাবু জানালেন, “আগে মদনগোপাল মিত্র নাম ছিল, সেই কারণেই আদালতে কেউ তুলেছিল। আমার ভোটার কার্ড, প্যান কার্ডে মদন মিত্র-ই আছে।”
[আরও পড়ুন: ‘শের মারতে শের পাঠিয়েছে’, ভাটপাড়ায় প্রার্থী হয়েই বিরোধীকে হুঙ্কার মদনের]
ছবি: মদন মিত্র
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.