Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘ছেলেধরা বলে রটিয়ে মেরে ফেলবে’, গণপিটুনির ঘটনায় আতঙ্কে ভিক্ষুকরাও  

ঝোলা নিয়ে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা।

Lynching fear strikes beggars
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:February 26, 2019 11:16 am
  • Updated:February 26, 2019 11:19 am  

সৈকত মাইতি, তমলুক:  ‘আপাতত ঝোলা তুলে রেখেছি। যতদিন না গুজব বন্ধ হয়, আমাদের কিছু করার নেই। সঞ্চয় বলতে কয়েক কেজি চাল। তাই ফুটিয়ে খাবো। কারণ ভিন গাঁয়ে গেলে তো ছেলেধরা বলে রটিয়ে মেরে ফেলবে।’  কথাগুলো গড়গড়িয়ে বললেন বলাই, গফুর, বাবলুরা। ওরা কেউ পঙ্গু, কেউ আবার বার্ধক্যের ভারে চরম অসহায়। তাই বাধ্য হয়েই ভিক্ষাবৃত্তি করেই দিনগুজরাণ। কিন্তু সম্প্রতি জেলা জুড়ে ছেলেধরা গুজবের জেরে একের পর এক গনপিটুনির ঘটনায় জড়োসড়ো হয়ে গিয়েছেন ওঁরাও। জীবন-জীবিকা নিয়ে তীব্র সংকটের মুখে পড়েছেন। 

[ মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে হাড়ে বাঁধা মশারি! বিতর্ক তুঙ্গে]

Advertisement

রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা ও মিনির সম্পর্ক কারোরই অজানা নয়। কিন্তু সেই স্নেহ ভালোবাসার সম্পর্ক যেন নষ্ট হতে বসেছে স্রেফ ছড়িয়ে যাওয়া কিছু গুজবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো নানা গুজবে গণপিটুনির মত ঘটনা ঘটছে জেলা জুড়ে। কোথাও ছেলেধরা,  তো কোথাও আবার কিডনিপাচারের গুজব। সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই এখন মারমুখী হয়ে উঠছে উত্তেজিত জনতা। জেলা সদর শহর তমলুক থেকে কাঁথি, রামনগর, পাঁশকুড়া সর্বত্র একই ছবি। পুলিশ-প্রশাসনের সচেতনতা প্রচার, গুজব আটকাতে আবেদন কিছুই যেন কাজে দিচ্ছে না। এর ফলে সবচেয়ে বেশি চিন্তায় পড়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি করে যাঁদের সংসার চলে তাঁরা। এমনই এক অসহায় বৃদ্ধ এসে পড়েছিলেন সুদুর গ্রাম ছেড়ে তমলুক শহরের পুরসভার এলাকার সৈয়দপুর, পদুমবসান এলাকায়। ঝোলা কাঁধে, শতচ্ছিন্ন পোশাকে হাতে আরও একখান পুটলি নিয়ে। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই হুড়মুড়িয়ে নিজের অসহায়ের কথা বলে ফেললেন তিনি।

নাম বাবলু সিং(‌৬৫)‌। ভগবানপুরের মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা। অভাবের সংসারে চরম দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে দুই মেয়ে ও দুই ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলে ক্যানসারে আক্রান্ত, তাঁর চিকিৎসা চলছে। বাধ্য হয়েই ভিক্ষাবৃত্তিকেই বেছে নিয়েছেন বাবলু। আশপাশের গ্রাম ছড়িয়ে বর্তমানে তমলুক, মেচেদা, নন্দকুমার এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়ান। বলাই আবার দুর্ঘটনায় দুটি পা হারিয়েছে। বাধ্য হয়েই একরকম জেনে বুঝেই প্রাণের মায়া ছেড়ে ঝোলা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বাড়ির বাইরে পা রাখা। “আমি তো চোখে দেখিনি। তবুও লোকে বলছে। বোরখার আনাড়ে ছেলেধরা। অনেকে তাই সাবধান করেও দিয়েছেন। তবুও আবেদন যেন কোনও রকমের অপবাদ দিয়ে প্রাণে না মেরে ফেলা হয়।”

[ ১০ বছর পর খোঁজ মিলল ছেলের, ঘরে ফেরার অপেক্ষায় পরিবার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement