রাজা দাস, বালুরঘাট: বালুরঘাটে বিস্ফোরণের ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের কথায়, যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে তার মালিক শিবু সেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ। তাই আসন্ন নির্বাচনের জন্যই তার বাড়িতে বিস্ফোরক মজুত করা হচ্ছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আবেদন জানান তিনি। প্রসঙ্গত, শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে বিস্ফোরণে দগ্ধ মহিলার।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার। এদিন দুপুরে আচমকাই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে বালুরঘাটের বিশ্বাসপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। শব্দের উৎস স্থানীয় ব্যবসায়ী শিবু সেনের বাড়ি। দুপুরে সেলুনে গিয়েছিলেন বাড়ির কর্তা শিবু সেন। ঘরে ছিলেন তাঁর স্ত্রী প্রতিমা সেন। সেসময় বাড়ির ভিতর হওয়া বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে স্থানীয় বাসিন্দারা শিবু সেনের বাড়িতে ছুটে যান। বাড়ি থেকে বছর পঁয়তাল্লিশের প্রতিমা সেনকে গুরুতর আহত অবস্থা উদ্ধার করে বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। ঘটনার পর শিবু সেন দাবি করেন সিলিন্ডার ফেটেই এই দুর্ঘটনা। কিন্তু বালুরঘাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রান্নাঘর থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই স্থানীয়রা দাবি করেন যে, ওই বাড়িতে মজুত করা ছিল বিস্ফোরক। শুরু হয় তদন্ত।
শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিষ নন্দী, ডিএসপি সদর ধীমান মিত্র, বালুরঘাট থানার আইসি গৌতম রায়। বিস্ফোরণে চুরমার হয়ে যাওয়া কাঠের দরজা, পোড়া কাপড়ের টুকরো-সহ অনান্য নমূনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। তবে এদিন বাড়িতে দেখা মেলেনি শিবু সেনের। মৃতার দাদা তাপস চক্রবর্তীর কথায়, গ্যাস সিলিন্ডার অক্ষত রয়েছে। তাহলে কী থেকে হল এই বিস্ফোরণ। পুলিশি তদন্তের দাবি জানান তিনি। মজুত করা বিস্ফোরক থেকেই এই বিস্ফোরণ দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। নির্বাচনের জন্যই বিস্ফোরক মজুত করা হচ্ছিল বলেই দাবি তাঁদের। সিআইডি তদন্তের দাবি জানান তাঁরা। ডিএসপি সদর ধীমান মিত্র বলেন, ওই বাড়িতে গিয়ে কিছু নমূনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। ঘটনা এখনও পরিস্কার নয়। তদন্ত চলছে।
এপ্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, শিবু সেন তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ। আগে সক্রিয়ভাবে তৃণমূল করতেন। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে যেকোনও নির্বাচনে তৃণমূল বোমা-গুলি নিয়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। তাদের ধারণা, পুরভোটের কারণে ওই ব্যক্তি ঘরে সক্রিয় বিস্ফোরক রেখেছিল। সেটাই ফেটে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এবিষয়ে তৃণমূল টাউন সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, কেউ ব্যক্তিগত ভাবে কারও সঙ্গে আলাপ রাখতেই পারেন। তবে শিবু সেন তৃণমূলের কেউ ছিলেন না এবং কেউ নন, দাবি তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.