ধীমান রায়, কাটোয়া: অজয় নদের প্লাবনে গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন। গ্রামের অদূরে নদীবাঁধই এখন পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের সাঁতলা গ্রামের বাসিন্দাদের আশ্রয়স্থল। সেখানে সারি দিয়ে একের পর এক তাঁবু। সেখানকার এক তাঁবুতেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন শতায়ু বৃদ্ধা ননীবালা জোয়ারদার। নেই চিকিৎসার ব্যবস্থা। দুবেলা মিলছে না খাবারও।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই অজয় নদের জলে প্লাবিত বর্ধমান। হু হু জল ঢুকতে শুরু করে আউশগ্রামের (Aushgram) সাঁতলাতেও। জলবন্দি হয়ে পড়েন বহু মানুষ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগে কিছু মানুষ সামান্য কিছু জিনিসপত্র নিয়ে সরে এসেছিলেন। তাঁদের অধিকাংশই ঠাঁই নিয়েছে বাঁধের উপর। সহায়সম্বলহীন মানুষদের অনির্দিষ্টকালের আশ্রয় সেই তাঁবুই। জলের কারণেই পরিবারের সঙ্গে ঘর ছেড়েছিলেন ননীবালা দেবীও।
সাঁতলা গ্রামেই থাকতেন ননীবালাদেবীর মেয়ে সবিতা। তিনি বলেন, “সেদিন অসুস্থ মাকে কোনওরকমে তুলে নিয়ে আসি। এমনিতেই বয়সের ভারে অসুস্থ। তারওপর এই দুর্যোগে আরও ভেঙে পড়েছেন। এখন চিকিৎসার সুযোগ নেই। মাথায় ওপর ছাদ নেই। একপ্রকার খোলা আকাশের নিচে এভাবেই দিন কাটছে।”
ননীবালাদেবীর ভাইপো নৃপেন জোয়ারদার বলেন, “আমরা সামান্য কিছু জমিতে সবজি চাষ করতাম। পুকুরে মাছ চাষ হত। এখন সবজি ক্ষেতে শুধু পলির স্তর। পুকুর ভেসে গিয়েছে। জেঠিমাকে কোথাও ঘরভাড়া করে রেখে দেওয়ার সামর্থ্য নেই। হয়তো এই তাঁবুতেই তাঁকে প্রাণত্যাগ করতে হবে।” সবিতাদেবী জানান, শুধুমাত্র একজন আশাকর্মী এসে তার মায়ের শারীরিক অবস্থা দেখে গিয়েছেন। ওষুধপত্র কিছুই জোটেনি। জোটেনি ভাল খাবার। এখন অজয় নদের বাঁধের তাঁবুতেই মৃত্যুর দিন গুনছেন শতায়ু ননীবালাদেবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.