Advertisement
Advertisement

Breaking News

সৌমিত্র খাঁ

আড়ালে থেকেই বিষ্ণুপরে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করলেন বিজেপির সৌমিত্র

নেপথ্যে রাজ্যের শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল, মত রাজনৈতিক মহলের।

Loksabha Election 2019: BJP's Soumitra Khan bags Bishnupur seat again

ছবি: উদয়ন গুহরায়

Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:May 24, 2019 3:12 pm
  • Updated:May 24, 2019 3:12 pm  

দেবব্রত দাস, বিষ্ণুপুর :  বিষ্ণুপুর লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরাকে রীতিমতো চমকে দিয়ে নিজের জয় ছিনিয়ে নিলেন বিজেপির সৌমিত্র খাঁ। লোকসভা ভোটের মুখে গতবারের তৃণমূল সাংসদ যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। দলবদলের পর ফের বিষ্ণুপুরেই প্রার্থী হন তিনি। 

[আরও পড়ুন: নিহত সত্যজিতের গড়ও হাতছাড়া তৃণমূলের, কৃষ্ণগঞ্জ উপনির্বাচনে জয়ী বিজেপি]

সৌমিত্রর এই সাফল্যের রসায়ন কি? প্রচারে না আসা সত্ত্বেও কেন বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের ভোটাররা তাঁকেই উজার করে ভোট দিলেন? এর কারণ লুকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেই। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের সাংসদ থাকার সুবাদে শাসক দলের অন্দরে নিজের কিছু বিশ্বাসী লোক তৈরি করেছিলেন সৌমিত্র। রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মতো বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সোনামুখী, পাত্রসায়র, ইন্দাস, কোতুলপুর, জয়পুর ও বিষ্ণুপুর শহরে তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল মাত্রা ছাড়িয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে বিষ্ণুপুরে নিজেদের সংগঠন মজবুত করে ফেলেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়,  এবারে লোকসভা ভোটে তৃণমূলকর্মীদের একাংশ কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলেও খবর।  একই সঙ্গে বিরোধী সিপিএম–এর ভোটের একটা বড় অংশ বিজেপির পক্ষে গিয়েছে। যার নিট ফল সৌমিত্রর বিপুল ভোটে জয়।

Advertisement

Sujata Khan

বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র হল বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, বড়জোড়া, ওন্দা, কোতুলপুর, ইন্দাস ও পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ। এরমধ্যে খন্ডঘোষ বাদে বাকি ছ’টি বিধানসভা থেকেই কম-বেশি লিড পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। এমনকী, নিজের এলাকা কোতুলপুর বিধানসভায়ও পিছিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা। ভোট প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সৌমিত্রর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। তাঁকে ‘গদ্দার’ বলে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে গালিগালাজ করেছিলেন। এ সব কিছুই প্রভাব ফেলেছে ইভিএম-এ। সৌমিত্রর জয় সে কথাই প্রমাণ করেছে। সৌমিত্র-পত্নী সুজাতাদেবী বলেন, ‘মানুষ যে সৌমিত্রকে ভালোবাসেন তা ভোটবাক্সে প্রমাণিত।
এই জয় বাঁকুড়া জেলার মানুষের জয়।’ এই পরাজয়কে অবশ্য সহজভাবে মানতে চাননি তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা। তাঁর বক্তব্য,  ‘এটা কি করে সম্ভব! কোন হিসেব মিলছে না। পুরোটাই মনে হচ্ছে গট আপ। নিশ্চয়ই কোনও কারচুপি হয়েছে। কেমন যেন সন্দেহ হচ্ছে।”

২০১৬ সালে বাঁকুড়ার কোতুলপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন সৌমিত্র খাঁ। বছর খানেক বাদে দলবদলে তৃণমূলে যোগ দেন কোতুলপুরের তৎকালীন কংগ্রেস বিধায়ক। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হন সৌমিত্র। দলের রাজ্য সভাপতিও হন। কিন্তু, মাস খানেকের মধ্যে দলের কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বিষ্ণপুরের সদ্য নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ। শেষপর্যন্ত  লোকসভা ভোটের মুখে তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমিত্র খাঁ। দলত্যাগের পরই তাঁর বিরুদ্ধে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া, বালি পাচার-সহ একাধিক অভিযোগে সৌমিত্র খাঁ-এর বিরুদ্ধে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন মামলায় দায়ের হয়। তাঁর বাঁকুড়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কলকাতা হাই কোর্ট। স্বামীর হয়ে বিষ্ণুপুরে প্রচারের দায়িত্ব সামলাতে হয় সৌমিত্র খাঁ-এর স্ত্রী সুজাতাকে।

[আরও পড়ুন: ‘এবার সুচিত্রা সেনের আত্মার কী হবে?’ মুনমুনের হারের পরই নেটদুনিয়ায় হাসির রোল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement