সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ‘দম থাকলে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে রিগিং করে জিতে দেখাক তৃণমূল।’ বর্ধমানে জনসভায় মঞ্চ থেকে এভাবেই তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷
দিলীপের হুঁশিয়ারি, ‘‘লোকসভা ভোট দিদির পুলিশ নয়, দাদার পুলিশ দিয়ে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের মত মানুষ ভোট না দিয়ে ক্ষমতা দখল আর করতে পারবে না তৃণমূল।’’ দিলীপবাবু বলেন, “নভেম্বরের বর্ধমান-সহ কয়েকটি পুরসভার নির্বাচন। পঞ্চায়েতের মতো সেখানেও আমাদের মনোনয়ন থেকে ভোটগ্রহণে বাধা দেবে তৃণমূল। কিন্তু ২০১৯ লোকসভায় আমরা বুঝে নেব তৃণমূলকে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই হবে লোকসভা ভোট। রাজ্য পুলিশ বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে থাকতে পারবেন না। কিন্তু দাদার পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে বুথে থাকবে। দেখব তৃণমূলের কত দম হয়েছে তখন রিগিং করে দেখাক।” এদিনের সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা তথা অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল রাজ্যে শিল্প করতে পারেনি কিন্তু, সিন্ডিকেট রাজ করতে পেরেছে।’’
[‘ধর্ষণের পর খুন করেছি’, বাবাকে ফোন কিশোরীর বন্ধুর]
এদিন বর্ধমানের বীরহাটায় পার্বতী ময়দানের সভায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসার কোনও সম্ভাবনা নেয়। নির্দিষ্ট সময়েই হবে লোকসভা ভোট। তিনি আরও বলেন, ‘‘২০১১ সালে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটগ্রহণ হয়েছিল৷ ৩৪ বছরের বাম সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। সামনের লোকসভা ভোটও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হবে। লোকসভা ভোটেই পতন হবে তৃণমূলের।’’ এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরার বাম জমানার পতনের কথাও তুলে ধরেন দিলীপবাবু। বলেন, “সেখানকার বামফ্রন্ট সরকার ২৫ বছর ধরে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হতেই সিপিএম পরাজিত হয়েছে। এখন সেখানে সিপিএম, কংগ্রেস কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। লোকসভার পর পশ্চিমবঙ্গেও তৃণমূলের ঝাণ্ডা ধরার লোক থাকবে না।” সভায় কেন্দ্রীয় সরকারে উন্নয়ন প্রকল্পকে রাজ্য সরকারের নিজেদের বলে প্রচার করছে বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
[দাদার সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রেমিককে খুন, দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড]
ইসলামপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকার ও পুলিশের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি৷ কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে এনে তিনি বলেন, “কাশ্মীরে কিছু ছাত্রছাত্রী বিপথে চালিত হয়ে পুলিশ, সেনার উপর ইট-পাটকেল ছোড়ে। কিন্তু পুলিশ বা সেনা তাঁদের উপর গুলি চালায় না। বরং তাঁদের বোঝায়। কিন্তু ইসলামপুরে শিক্ষক চেয়ে আন্দোলনে বাংলার পুলিশ গুলি চালিয়ে দুই ছাত্রকে মেরে দিল। আর পুলিশ বলছে তারা গুলি করেনি। তৃণমূল বলছে আরএসএস যুক্ত।” পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা টাকা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করছিল। সেখানে ২০০ শিক্ষক প্রয়োজন, সেখানে সাড়ে ৫০০ জনের কাছে টাকা নিয়েছে। তাই তাঁদের নিয়োগ দিচ্ছিল। সেখানে ইতিহাসের লোক দরকার সেখানে বাংলার শিক্ষক পাঠাচ্ছিল৷ যেখানে বাংলা প্রয়োজন সেখানে উর্দু পাঠাচ্ছিল। আর তাতেই স্থানীয়রা আপত্তি তোলেন।’’ এদিনের সভায় নাম না করে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন দিলীপবাবু। তিনি বলেন, “তৃণমূলের বীরভূমের নেতা পুলিশকে বোম মারতে বলেছিলেন। বীরভূমে এখন বোমে উড়ছে তৃণমূলের পার্টি অফিস। রোজই একটা করে পার্টি অফিসে ভাঙছে। আর ওই নেতা বলছেন বহিরাগতরা বোম মারছে। কবে পিছনে বোম ফেটে যাবে উনি বুঝতেও পারবেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.