নন্দন দত্ত, সিউড়ি: হ্যাটট্রিক করলেন শতাব্দী রায়৷ পরপর তিনবার বীরভূম কেন্দ্র থেকে দিল্লি গেলেন তৃণমূলের সাংসদ হয়ে। তাই বৃহস্পতিবার গণনাকেন্দ্রে ঢুকে ঝুঁকে মাটিতে হাত দিয়ে প্রণাম করলেন। বললেন, ‘‘এ মাটি পবিত্র মাটি। বীরভূম আমাকে যা দিয়েছে আমি তার কোনও শোধ দিতে পারব না।’’
তৃতীয়বারের জয়েও বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন শতাব্দী রায়। প্রথমবার জয়ের পর সিউড়ির শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ শিল্প বিদ্যাপীঠের গেট থেকে গণনাকেন্দ্র পর্যন্ত বিজয়যাত্রা করেছিলেন তিনি৷ বৃহস্পতিবার অবশ্য তা দেখা যায়নি৷ তবে তিনি জানান, তিনবার বীরভূম থেকে তার দিল্লি যাওয়ার অভিজ্ঞতা তিনরকম। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমবার জয়ী হলাম৷ জিতলাম। দ্বিতীয়বারে কিছুটা টেনশন ছিল। লোকে বলল আবার জিতে গেলাম। আর এবারে জয় নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম। তবে ব্যবধান নিয়ে চিন্তায় ছিলাম।’’ সকাল থেকেই সব রাউন্ডে এগিয়ে ছিলেন শতাব্দী। সারাদিন সিউড়িতে জেলা তৃণমূল ভবনে ছিলেন তিনি। হঠাৎই এগারো রাউন্ডের পর উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। খবর আসে এগারো রাউন্ডের পর বিজেপির সঙ্গে ব্যবধান পনেরো হাজারে নেমে এসেছে। তখনও ন’ রাউন্ড গণনা বাকি। ভবনে বসে তখন বিধায়করা, জেলা সভাধিপতি। শতাব্দী বললেন, ‘‘কোনও রাউন্ডে আমি হারিনি। তবে এবারের ভোট তো অন্যরকম। তাই উদ্বেগ ছিল।’’ জয়ের জন্য তিনটি কারণকে দায়ী করেছেন শতাব্দী রায়৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথমত দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিতীয় কারণ অনুব্রত মণ্ডলের সংগঠন, তৃতীয় কারণ বীরভূমের মানুষের ভালবাসা।’’
তবে জয়ী হয়েও বিজেপির প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডলকে শুভেচ্ছা জানান শতাব্দী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘জয় পরাজয় আছেই। আমাদের সকলেরই ইচ্ছে বীরভূমের উন্নয়ন। সেই লক্ষ্যেই সকলের সহযোগিতা চাই।’’ গতবারের থেকে আরও বেশি ব্যবধানে জয়ের জন্য তৃণমূল ভবনে এসে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। গতবারের লোকসভা নির্বাচনে ৬৭ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন শতাব্দী। এবার ব্যবধান বেড়েছে অনেকটাই৷ সংখ্যাটা ছুঁয়েছে ৮০ হাজার ৫১২ ভোটে৷ এদিন বীরভূম কেন্দ্রের হ্যাটট্রিক করা তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়কে দলীয় কর্মীরা সবুজ আবির মাখিয়ে, পুষ্পস্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। আপ্লুত শতাব্দী বলেন, ‘‘এটাই আমার বীরভূম।’’
ছবি: শান্তনু দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.