Advertisement
Advertisement
Lok Sabha Elections

হাওয়া ভালো নয় বিজেপির! অভিষেকের ‘মাস্টারস্ট্রোক’ই জলপাইগুড়িতে হাতিয়ার তৃণমূলের

পাঁচ বছর পরও বিজেপি সাংসদ ডা. জয়ন্ত রায়ের নাম মাঝেমধ্যে অনেকেই ভুলে যাচ্ছেন!

Lok Sabha Elections: TMC will follow Abhishek Banerjee's advice to win in Jalpaiguri
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:April 11, 2024 12:02 pm
  • Updated:April 11, 2024 3:35 pm  

ধ্রবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: খেলার শুরুতে আচমকা বলটা প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়ে দিতে পারলে আগেই তাদের চাপে ফেলে দেওয়া যায়। তাতে সেই পক্ষের ডিফেন্স যদি দুর্বল হয় তো কথাই নেই। তৃণমূলের জন্য ধূপগুড়ি মহকুমা ঘোষণার মাস্টারস্ট্রোক ছিল সেইরকম। জলপাইগুড়িতে লোকসভার আগে বিধানসভা উপনির্বাচনের হিসাব ধরলে সেটা তৃণমূলের প্রথম গোল। দ্বিতীয় গোলের জায়গাটা তৈরি থাকলেও সেটা এখনও হওয়া বাকি। বিজেপির দুর্বল ডিফেন্সই তৃণমূলের সেই সম্ভাব্য দ্বিতীয় গোল, যাকে আঁচ করা গিয়েছে।

দুর্বল ডিফেন্স কেন! সাংসদ নিজে প্রার্থী। তাতে আরএসএসের সদস্য। আরএসএস তাদের সব শক্তি নিয়ে নেমেছে। তাহলে দুর্বল কোথায়? দুর্বল হল প্রার্থীর জনসংযোগ। পাঁচ বছর পরও সাংসদ ডা. জয়ন্ত রায়ের নাম মাঝেমধ্যে অনেকেই ভুলে যাচ্ছেন। যে জেলায় শিক্ষার মান ঈর্ষণীয়, সেখানে এমন দুর্বল জনসংযোগ যথেষ্ট চিন্তার কারণ বইকি! যে কারণে জয়ন্ত রায়কে দল প্রথমটায় এবার প্রার্থীই করতে চায়নি। শোনা যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও বেঁকে বসেছিলেন। কিন্তু তাহলে কে? যাঁকেই প্রার্থী করা হত, সূত্রের খবর, তিনিও আরএসএসের সদস্য। ফলে মিত-পরিচিত সাংসদ মুখ সরিয়ে নতুন করে একজনকে সকলের সামনে আনাটা আরও চাপ তৈরি করত। এইরকমই একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা প্রার্থী নিয়ে জেলার সিদ্ধান্তে বিজেপিকে বারবার পিছিয়ে দিচ্ছিল। যা তৃণমূলের সামনে অঢেল সুযোগ তৈরি করে রেখেছে। তবে বিজেপি প্রার্থীর এই জনসংযোগের ঘাটতির অন্যতম কারণ এলাকায় তাঁর ভালো মানুষ মিতভাষী পরিচিতি। একে ডাক্তার তায় সজ্জন ব্যক্তি। সজ্জন কথাটা চলে তৃণমূলের ধূপগুড়ির বিধায়ক তথা লোকসভার প্রার্থী নির্মল রায়ের ক্ষেত্রেও। কিন্তু তিনি আপাতত এগিয়ে ধূপগুড়ির স্মৃতি নিয়ে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত! ফব’কে বিঁধে সেলিমের তোপ, ‘বেশি কথা বলবেন না’]

জলপাইগুড়ির গরিমার ইতিহাস। বহু যুগ ধরে বাণিজ্যের সঙ্গে তার যোগসূত্র, অন্যদিকে জল্পেশ মন্দির। শোনা যায়, একসময় ভালো গরম পোশাকের বাণিজ্য হত এই এলাকায়। রয়েছে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ। কেউ নামের উৎপত্তির জন্য জল্পেশ শিবের মন্দিরের উল্লেখ করেন, আবার কেউ বলেন জলপাই নাম থেকেই জেলার এমন নামকরণ। এই জায়গায় নাকি ভালো জলপাই পাওয়া যেত। আর রয়েছে গর্বের একশৃঙ্গ গন্ডারের জন্য বিখ্যাত গরুমারা, চাপরামারি, বৈকুণ্ঠপুর অভয়ারণ্য। সঙ্গে চা বাগান। যা প্রবলভাবে সমৃদ্ধ করেছে এই জেলাকে। জেলার একদিকে ভুটান সীমান্ত, অন্যদিকে রয়েছে বাংলাদেশ। যা আন্তর্জাতিক মানচিত্রেও তুলে এনেছে এই জেলাকে।

কিন্তু সম্প্রতি একটা বড় বিপর্যয় এই জেলাকে খবরের শিরোনামে এনে দিয়েছে আরও বেশি করে। ময়নাগুড়ির উপর বিধ্বংসী টর্নেডো। মাত্র ৪ সেকেন্ডে তার ধ্বংসলীলায় ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রায় আড়াইশো মানুষ। যে ক্ষতে প্রলেপ দিতে ঘটনার দিন রাতেই ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবস্থা একটু সামলাতেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন মানুষ। ৫ বছরে বিজেপি সাংসদ জেলার জন্য একটা কাজ করেনি। তাঁকে দেখা যায়নি এলাকায়। কেন্দ্রের সরকার কোনও কাজ করেনি। তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে, আবাসের টাকাটা পেলে কাঁচা বাড়িতে থাকতে হত না। প্রাণ যেত না, এত ক্ষতি হত না। তাহলে বিজেপিকে কেন ভোট দেবে? মনে রাখতে হবে, বাম আমলের প্রবল প্রতাপে অন্যতম শরিক ছিল এই জেলা। তাদের হাত থেকে ২০১৪-এ কেন্দ্রটি কেড়ে নেয় তৃণমূল। পরের বছরই আবার তা ছিনিয়ে নেয় বিজেপি।

[আরও পড়ুন: বিজেপি-তৃণমূলের লড়াইয়ে নেপোয় মারে দই! দলীয় কার্যালয় থেকে চেয়ার নিয়ে চম্পট চোরের]

তার পর থেকে আবার সেই বিজেপির দিকেই আঙুল। এই পরিস্থিতিতে ধূপগুড়ির জয়ের ঘোড়াকেই বাজি ধরেছে বিজেপির প্রতিপক্ষ। সঙ্গে কৌশলী স্ট্র্যাটেজি সামনে এনেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি এখানে সভা করে বলে গেছেন, যাকে ইচ্ছা ভোট দিন। শুধু বাড়ির জল, রাস্তা, এলাকার উন্নয়নের খতিয়ানটা দেখে নিন। আর দলকে নিদান দিয়েছেন বুথস্তরে সৈনিক সাজাতে, সেই পঞ্চায়েত ভোট থেকে। প্রধানমন্ত্রী সামনে রেখেছেন তাঁর নামের গ্যারান্টি। কিন্তু তাতে কি চিঁড়ে ভিজবে! গ্যারান্টি তো ৫ বছরের হয়। ১ লাখ ৮০ হাজারে জেতা সেই আসনে ৫ বছরই তো কাজ করেনি বিজেপি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement