ফাইল চিত্র।
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য , শিলিগুড়ি: বৃহস্পতিবার কোচবিহারে (Cooch Behar) সভা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi)। সেখানে জন বার্লা হাজির থাকেন কিনা সেদিকেই তাকিয়ে পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল। এর আগে শিলিগুড়ির(Siliguri) কাওয়াখালিতে প্রধানমন্ত্রীর সভা মঞ্চে বার্লা (John Barla) উপস্থিত থাকলেও নির্বাচনী প্রচারে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। বার্লার অনুগামীদের একটা বড় অংশ বিজেপি বিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ। ওই পরিস্থিতিতে কোচবিহার এবং রবিবার ধূপগুড়ির সভায় মোদি তাঁর মন্ত্রিসভার ‘বিদ্রোহী’ সদস্যকে সামলে নিতে প্রকাশ্যে বার্তা দেবেন না কি দলীয় স্তরে আলোচনা করবেন সেটাই দেখার।
চা বলয়ে ‘আদিবাসী বিকাশ পরিষদ’-এর নেতা হিসেবে পরিচিত জন বার্লাকে ‘ম্যানেজ’ করতে না পারলে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি আসনে সমস্যা বাড়বে সেটা বিজেপি নেতৃত্বের বড় অংশই স্বীকার করছেন। এদিকে কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা দলীয় প্রার্থী রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে পড়ায় দার্জিলিং আসনেও জটিলতা বেড়েছে। প্রার্থী ঘোষণার আগে পাহাড়-সমতলে হর্ষবর্ধন শ্রীংলার সঙ্গে যে বিজেপি কর্মীরা যোগাযোগ রেখে চলতেন তাদের বড় অংশ ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থী ইস্যুতে বিষ্ণুপ্রসাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিষ্ণুপ্রসাদ ও জন বার্লা ‘কাঁটায়’ বিদ্ধ বিজেপি। দলীয় নেতৃত্ব প্রকাশ্যে বলছেন, “এসব কোনও ব্যাপার নয়”। তবে দলীয় সূত্রে খবর, বাইরে এভাবে আত্মবিশ্বাস দেখালেও আড়ালে বিজেপি নেতৃত্ব বিদ্রোহী বিধায়ক তথা নির্দল প্রার্থী বিষ্ণুপ্রসাদের সঙ্গে কারা যোগাযোগ রাখছেন সেদিকে কড়া নজরদারি শুরু করেছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার (Alipurduars Lok Sabha Constituency) কেন্দ্র থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে জয়লাভ করেন বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা। মন্ত্রীও হন তিনি। কিন্তু এবার টিকিট না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় হাজির হন। জানান, দলের প্রচারে আছেন। দলের নির্দেশ মেনে কাজ করবেন। কিন্তু কোথায় কী?
আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা জন বার্লার গতিবিধি নিয়ে কিছুই জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, “জন দা পারিবারিক সমস্যায় আছেন।” বৃহস্পতিবার কোচবিহারে এবং রবিবার ধূপগুড়ি জনসভাও তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে এড়িয়ে যাবেন কি না তার দিকে নজর সবার। যদিও বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শ্যামচাঁদ ঘোষ বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে ব্যক্তি মোটেও ফ্যাক্টর নয়। ভোট হবে মোদির মুখ দেখে। তাই আমরা কে এলো না, কে উলটো বকছে সেসব নিয়ে ভাবছি না।”
এদিকে কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা এখন রীতিমতো দার্জিলিং লোকসভা (Darjeeling Lok Sabha Constituency) কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজেপির ভরসা এখন বিমল গুরুং। কারণ, মনোনয়ন জমা করার আগে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা পার্টির সদর দপ্তর সিংহামারীতে গুরুংয়ের সঙ্গে পৃথকভাবে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বিষ্ণুবপ্রসাদ। বিষ্ণুপ্রসাদের ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থী ইস্যু ভোট কাটাকুটির অঙ্ক তৃণমূল ও কংগ্রেসকে কিছুটা হলেও সুবিধা এনে দিতে পারে বলেই রাজনৈতিক মহলের শঙ্কা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.