জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বছর কয়েক আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তখনই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সেসময় বারণ করেন। চব্বিশের লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Election 2024) বনগাঁ কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বাগদার ‘বিজেপি’ বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। ভোটের কয়েকদিন আগে এবার তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। শুক্রবার বিধানসভায় গিয়ে তিনি স্পিকারের কাছে ইস্তফা দেন। এদিন নিজের বাড়ির মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রণাম করেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন বিশ্বজিৎবাবু| শিশির অধিকারীর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, তাঁকে শিক্ষা দিতে প্রোটোকল মেনে পদত্যাগ করলেন।
বনগাঁ (Bongaon) সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি হওয়ার পর বারবার বিজেপি নেতাদের কটাক্ষের স্বীকার হতে হয়েছে বিশ্বজিৎ দাসকে। শুক্রবার তিনি ইস্তফা দেওয়ার পর বলেন, ”বিজেপিতে যাওয়াটা সব থেকে বড় ভুল ছিল। আজ আমি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে দিলাম। বিধায়ক কোনও দলের হয় না। মানুষের সুখে-দুঃখে, ভালো-মন্দে কাজ করাটাই আমার লক্ষ্য। আমি বাগদার প্রতিটি এলাকায় কাজ করেছি| দমকল বিভাগ বৈদ্যুতিক শ্মশান তৈরির কাজ চলছে| প্রতিটি এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের টাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছি।” তৃণমূল (TMC) জেলা সভাপতি হয়েও কেন এত দিন বিজেপির বিধায়ক পর থেকে কেন ইস্তফা দেননি? এই প্রশ্নের বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ”শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari) তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে দলবদল করেননি। তাঁকে দেখেই আমি প্রথমে পদত্যাগ করিনি। এখন লোকসভার প্রার্থী হয়েছি, প্রোটোকল মেনে পদত্যাগ করেছি। তৃণমূলই আমার প্রকৃত জায়গা।”
বিশ্বজিৎ দাসের (Biswajit Das) এহেন পদক্ষেপকে কটাক্ষ করে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ”শুভেন্দু অধিকারী, তাপস রায়রা যখন বিজেপিতে এসেছেন, ওঁরা আগের পদ ছেড়েই এসেছেন। বিশ্বজিৎবাবুর তো আমও গেল, ছালাও গেল| উনি বাগদার মানুষের জন্য কিছুই করেননি।”
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে তৃণমূলের (TMC) টিকিটে জয়লাভ করে বনগাঁ উত্তর বিধানসভার বিধায়ক হন বিশ্বজিৎ দাস। পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্র থেকে ফের জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়। তার পরেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধের কারণে বিশ্বজিৎ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে (BJP) যোগদান করেন। ২০২১ বাগদা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন| তার কয়েক মাস বাদে ফের তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’ হয় বিশ্বজিতের। এর পর তাঁর নেতৃত্বেই বনগাঁ পৌরসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভালো ফল করে তৃণমূল। ২০২২ সালে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলের সভাপতি হন বিশ্বজিৎ। এবার তাঁকে দিল্লির লড়াইয়ে এগিয়ে দিয়েছে শাসকদল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.