(বাঁদিকে) শান্তনুু ঠাকুর এবং (ডানদিকে) নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: আরামবাগ, কৃষ্ণনগর এবং বারাসত। তিনদিনে তিনটি সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যার মধ্যে কৃষ্ণনগর এবং বারাসত দুটি মূলত মতুয়া গড় হিসাবে পরিচিত। লোকসভা নির্বাচনের মুখে বাংলায় দাঁড়িয়ে CAA বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। তবে ভোটের মুখে মতুয়া মন জিততে এখনও CAA অস্ত্রেই শান দিয়ে চলেছেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। ভোটের একদিন আগে হলেও CAA লাগু হবেই বলেই আত্মবিশ্বাসী তিনি।
বৃহস্পতিবার হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মন্দিরে পুজো দিয়ে ভোট প্রচার শুরু করেন শান্তনু। তিনি নাটমন্দিরে যান। সেখানে কয়েকশো বিজেপি কর্মী-সমর্থক তাঁকে বরণ করে নেন। পুনরায় প্রার্থী হওয়ায় শুভেচ্ছা জানানো হয়। মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকেও তাঁকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে CAA লাগু নিয়ে আরও একবার সুর চড়ান আত্মবিশ্বাস শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, “CAA লাগু হবেই। ভোটের একদিন আগে হলেও হবে। তার জন্য সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ।” এর আগে বুধবারই বারাসতে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন সভামঞ্চ থেকে সিএএ নিয়ে কেন কিছু বললেন না মোদি? সে প্রশ্নে অবশ্য শান্তনু বলেন, “আমরা সব কিছু বলে দিয়েছি। প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কেন বলবেন?”
উল্লেখ্য, এই প্রথমবার নয়, এর আগেও একাধিকবার CAA লাগু হবে বলেই আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গিয়েছে শান্তনুর গলায়। গত ২৮ জানুয়ারি তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘যাঁরা ১৯৭১ সালের পরে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দরকার। কারণ, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে হবে। বিজেপি সরকার সিএএ চালু করলে আর কোনও সরকারের ক্ষমতা নেই, আমাদের যখন খুশি ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বার করে দেয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ চালু করবে।’’ অবশ্য তার কয়েকদিনের মধ্যেই ভোলবদল করেছিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ। দাবি করেছিলেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে রুল ফ্রেম (নীতি প্রণয়ন) সম্পন্ন হবে বলতে গিয়ে মুখ ফসকে গিয়েছিল। কিন্তু সিএএ কিছুদিনের মধ্যে লাগু হবে এটা ১০০% গ্যারান্টি।’’ সম্প্রতি আধার কার্ড বাতিল বিতর্কের সময়েও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লাগুর বিষয়ে সওয়াল করেছিলেন। আর এবার হাইভোল্টেজ লোকসভার মুখে ফের CAA হাতিয়ারই কাজে লাগাতে চাইছেন শান্তনু।
দিল্লিতে দ্বিতীয় মোদী সরকার গঠনের পরই ২০১৯ সালে এই সংশোধিত নাগরকিত্ব আইন পাশ করানো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে বেশ কয়েকটি বছর কেটে গেলেও, সেই আইন এখনও কার্যকর হয়নি। কেন আইন এখনও কার্যকর হচ্ছে না তা নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা যেমন হয়েছে, তেমনই আমজনতার মধ্যেও কৌতূহল তৈরি হয়েছে বিস্তর। তবে প্রথম থেকে সিএএ বিরোধিতায় সরব তৃণমূল। শান্তনু ডেডলাইন দেওয়ার পরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করেছিলেন, অন্যান্যবারের মতো শান্তনু এবারও সারবত্তাহীন দাবি করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.