Advertisement
Advertisement
Purulia

কংগ্রেসকে ‘বেইমান’ অ্যাখ্যা, পুরুলিয়া কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে অনড় ফরওয়ার্ড ব্লক

আগে ফরওয়ার্ড ব্লক-কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়াই করায় আখেরে ক্ষতির মুখে পড়ে সিংহ-বাহিনী। এবার আর সেই পথে হাঁটতে নারাজ বামেদের এই শরিক।

Lok Sabha Election 2024: Forward Block blames Congress as 'traitor' ahead of election
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 22, 2024 9:23 pm
  • Updated:March 22, 2024 9:41 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024)  আগে শরিকি জটে দীর্ণ বামফ্রন্ট। কংগ্রেসকে ‘বেইমান’ অ্যাখ্যা দিল তাদের সঙ্গে কোনও জোটে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিল ফরওয়ার্ড ব্লক। বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় কংগ্রেস পুরুলিয়া কেন্দ্রে দলের জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতোকে প্রার্থী করে। তার পর শুক্রবার সকালে পুরুলিয়া জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক জানিয়ে দিয়েছে, ‘বেইমান’ কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁরা জোটে যাবেন না। কেন ফরওয়ার্ড ব্লক কংগ্রেসকে বেইমান বলল, তার ব্যাখ্যাও দেন ফরওয়ার্ড ব্লকের (Forward Block) রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তথা পুরুলিয়ার বাসিন্দা অসীম সিনহা। তবে এর পালটাও দিয়েছেন পুরুলিয়ার কংগ্রেস (Congress) প্রার্থী তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো। ফরওয়ার্ড ব্লক তাদের শরিক দল সিপিএমকে এদিন দুপুরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আবারও জানিয়ে দিয়েছে, পুরুলিয়া আসন তারা ছাড়তে পারবেন না। ১৯৭১ সাল থেকে এই আসনে তাঁরা লড়ছেন। এটা তাদের ‘ঐতিহ্য’র আসন।

পুরুলিয়ায় ফরওয়ার্ড ব্লকের অঘোষিত প্রার্থীর নামে দেওয়াল লিখন। ছবি: সুনীতা সিং।

ফরওয়ার্ড ব্লক জানিয়েছে, বাংলায় বিজেপি-তৃণমূল বিরোধী মানুষ বিকল্প হিসাবে ঐক্যবদ্ধ বামফ্রন্টকে (Left Front) দেখতে চাইছে। কংগ্রেস ও আইএসএফ-এর সঙ্গে বামফ্রন্টের জোট মানুষ গ্রহণ করেনি। তার প্রমাণ, ২০১৬ ও ২০২১-এর বিধানসভার ভোটের ফলাফল। বামপন্থীদের ভোট কংগ্রেস প্রার্থীর পক্ষে যায়। কিন্তু কংগ্রেসের ভোট বামপন্থী প্রার্থীর সমর্থনে পড়ে না। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পুরুলিয়ার বাসিন্দা অসীম সিনহা বলেন, “পুরুলিয়ার কংগ্রেস নেতাদের বিশ্বাস করা যায় না। এরা তৃণমূল ও বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতা করার পরও ‘বেইমানি’ করেছে।”

Advertisement

সেই উদাহরণ এদিন তুলে ধরে পুরুলিয়া জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক। তাঁদের কথায়, “২০১১ সালে তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে জোট করার পরও জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রাথী দিয়ে ভোট কেটে নেওয়ার ফলে বামফ্রন্টের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। একইভাবে ২০১৬ সালে ফরওয়ার্ড ব্লকের ভোট নিয়ে বাঘমুন্ডিতে নেপাল মাহাত জয়ী হলেও জয়পুর কেন্দ্রে কংগ্রেসের ভোট তৃণমূলের প্রার্থীর পক্ষে ‘স্থানান্তর’ করে দিয়ে বামফ্রন্টের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীকে পরাজিত করে। ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হওয়া সত্বেও ঝালদা (তখন এই নামেই ছিল কেন্দ্রটি, বাঘমুন্ডি হয়নি) বিধানসভা কেন্দ্রে নেপাল মাহাতো নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াই করেছিলেন।” পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো (Nepal Mahato) কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে ‘পুরুলিয়া কংগ্রেস’ গঠন করেন। তারপর তিনি বামফ্রন্টের মন্ত্রী তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের সত্যরঞ্জন মাহাতোকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে হারান। পরবর্তীকালে ‘পুরুলিয়া কংগ্রেস’ জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যায়।

[আরও পড়ুন: ‘সিরিয়াল ছেড়েছি তৃণমূলের জন্য’, ভোটের মুখে বড় কথা লাভলির!]

২০২১ সালে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হিসাবে জয়পুর কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থীর নাম ঘোষিত হলেও কংগ্রেস প্রার্থী দেয় ওই কেন্দ্রে। দলের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অসীম সিনহার কথায়, “কংগ্রেস ‘বেইমানি’ করতে পারে এটা মাথায় রেখেই আমরাও প্রস্তুত ছিলাম। তাই শেষ দিনে বাঘমুন্ডি কেন্দ্রে আমরাও মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধ্য হই।” সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতার মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লক কংগ্রেসকে ‘বেইমান’ অ্যাখ্যা দিয়ে অতীতের উদাহরণ তুলে ধরায় ভোটের ময়দানে পুরুলিয়ার রাজনীতি রীতিমতো সরগরম।

[আরও পড়ুন: রাজের জন্য মাছ বাজারে দরদাম মিঠুন চক্রবর্তীর, ভাইরাল ‘মহাগুরু’র কীর্তি]

তবে পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা পুরুলিয়া কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতো বলেন, ” আমরা ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে জোট করতে যায়নি। এই নিয়ে কোন রকম কোন কথা হয়নি। কোথাকার ভোট কোথায় স্থানান্তর হয়েছে তা জেলার সাধারণ মানুষ জানেন। আমরা ওইসব বিতর্কে যেতেই চাই না। ” এদিন পুরুলিয়া জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের শরিক দল সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের কোন জোট হয়নি। আসন সমঝোতার মতো পথ তৈরি হয়েছে। ফলে তারা আশাবাদী, বামফ্রন্টগতভাবেই পুরুলিয়া কেন্দ্রে তাঁদের প্রার্থী হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement