প্রচারে যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য।
রমেন দাস: রাজ্যের ৪২ লোকসভা আসনের মধ্যে অন্যতম যাদবপুর লোকসভা। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই অঞ্চলের গুরুত্বও অপরিসীম। এবার সেই যাদবপুর লোকসভা আসনই ভোটের আগে ফের চর্চায়। সূত্রের খবর, এই আসনেই সৃজন, সায়নী, অনির্বাণদের প্রতিপক্ষ হিসেবে লড়াইয়ে নেমেছেন নির্দল প্রার্থী তনুশ্রী মণ্ডল।
কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের সিপিএম (CPM) প্রার্থী, রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্তনীর আরও একটি পরিচয়ও রয়েছে। সূত্রের খবর, তনুশ্রী এলাকায় বামনেত্রী হিসেবেই পরিচিত। বামেদের ছাত্র সংগঠন, তারপর যুব সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত তিনি। এমনকী সৃজন ভট্টাচার্যের (Srijan Bhattacharya) ভোট প্রচারেও বারবার দেখা গিয়েছে ৩৩ বছরের এই যুবতীকে।
কিন্তু সৃজনের প্রচার করে ফের তিনিই কেন একই আসনের নির্দল প্রার্থী, অর্থাৎ সেই সৃজন ভট্টাচার্যদেরই প্রতিদ্বন্দ্বী? ঠিক এই প্রশ্নের উত্তরেই যাদবপুর (Jadavpur) লোকসভার নির্দল প্রার্থী তনুশ্রী মণ্ডল ‘কল রেকর্ড না’ করার পরামর্শ দিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল‘-কে বলছেন, “আপনাদের কেন মনে হচ্ছে, কীভাবে ধরে নিলেন আমি সৃজনের বিরুদ্ধে লড়াই করছি বলেই প্রার্থী হয়েছি? এই লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) বহু প্রার্থী লড়াই করছেন। আমিও লড়ছি, ব্যস এইটুকুই!” যদিও সৃজনের বিরুদ্ধে সিপিএমের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নাকি নিজের ‘নাক কেটে’ সৃজনের ‘যাত্রাভঙ্গ’ করার কৌশল? এসব প্রশ্নের মধ্যেই যাদবপুর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) দেবব্রত মজুমদারের দাবি, “এখানে সিপিএমের তেমন কোনও প্রভাব নেই। প্রায় নিষ্ক্রিয়। নিজেদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। নানা সমস্যা নিজেদের দলেই। এক্ষেত্রেও তাই হতে পারে, হয়তো একে অন্যের উপর রাগ করেছেন! যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সিপিএমের মধ্যে বহু গোষ্ঠী যেমন রয়েছে, আবার ভোট করানোর কৌশল হিসেবে ইচ্ছা করে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেওয়ার রীতিও রয়েছে, সবটাই হতে পারে।
কিন্তু ‘সতীর্থ’ তনুশ্রী প্রসঙ্গে কী বলছেন সৃজন? যাদবপুরের প্রার্থীর দাবি, “আমার বিরুদ্ধেই লড়ছেন, একথা তো বলা ঠিক হবে না। তিনি নির্বাচনে লড়াই করতেই পারেন। তবে বিষয়টি সম্পর্কে আমি বিস্তারিত কিছু জানি না। তাই এই বিষয়ে আমি এখনই কিছু বলব না।”
যদিও সামগ্রিকভাবে ‘নির্দল প্রার্থী’ (Indepedent) তত্ত্বে উঠে আসছে ভিন্ন রাজনৈতিক কৌশলের কথাও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, সব রাজনৈতিক দলের মধ্যেই ইচ্ছা করে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর অভ্যাস রয়েছে। যার কারণ, ভোটের সময় প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট হিসেবে ‘চেনা’ লোক রাখা যায়। আনুষাঙ্গিক অনেক সুবিধা হয়। বিষয়টি স্পষ্ট করে ওই অংশের দাবি, ধরা যাক, কোনও রাজনৈতিক দলের একজন প্রার্থীর একজন পোলিং এজেন্ট একই সময় থাকবেন বুথের মধ্যে। সেখানে দাঁড়িয়ে ‘তাদের লোক’ নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্টও থাকছেন বুথে। অর্থাৎ নিজের এবং নির্দল মিলিয়ে দু’জন পোলিং এজেন্ট রাখা যায়, এছাড়াও অফিসিয়াল কাজে সুবিধাও দেয় পরিচিত প্রার্থী! প্রসঙ্গত, এই লোকসভা আসনে মোট প্রার্থী ২২ জন।
তবে তনুশ্রী মণ্ডলের ফেসবুক পোস্টে সৃজনের প্রচার, এবং তারপরেই তাঁর একই আসনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কৌশল না বিবাদ, চর্চায় এসেছে সবটাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.