ভোটপ্রচারে ব্যস্ত দার্জিলিংয়ের কংগ্রেস প্রার্থী মুনিশ তামাং
তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: নির্বাচনী ময়দানে নেমে লাগাতার কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে তাঁকে। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও নির্বাচনী ময়দানে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালাতে পিছপা হচ্ছেন না তিনি। দিনভর পাহাড় থেকে সমতল বাম ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে লাগাতার প্রচার ঘাম ঝরাতেও দ্বিধাবোধ করছেন না তিনি। তবে দিনের শেষে প্রায় ১৫৫০ কিলোমিটার দূরে থাকা নিজের প্রিয় সারমেয় ‘ওরিও’কে একবারের জন্যও ভুলতে পারছেন না কংগ্রেস প্রার্থী মুনীশ তামাং।
দিল্লির বাড়িতে থাকা পোষ্যটির খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তাও লাগাতার খোঁজ নিচ্ছেন পরিবারের লোকেদের থেকে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া ‘ওরিও’র ছবি নিজের সমাজমাধ্যমে অ্যাকাউন্টে পোস্ট করতেও ভুলছেন না কংগ্রেস প্রার্থী। কংগ্রেস প্রার্থীর প্রতিদিনের এলাকায় এলাকায় ঘুরে প্রচার করার ছবির পাশে একেবারে উজ্জ্বল করে নজরে পড়ে পোষ্যের রোদ পোহানোর ছবি। মুনীশের কথায়, ‘‘একমাত্র ওঁরাই নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে পারে। তাই ওকে আমি এক মিনিটের জন্য ভুলতে পারি না। অনেক দূরে আছি জানি ওরও মন খারাপ হচ্ছে আমার জন্য।’’
মূলত কালিম্পংয়ের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন দিলিতে বসবাস করেন মুনীশ তামাং। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত মতিলাল নেহেরু কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক তিনি। সেখানেই বসবাস করেন মুণিশ। সাধারণত এলাকার অবলা জন্তুদের প্রতি প্রথম থেকেই টান অনুভব করতেন কংগ্রেস প্রার্থী। তবে বিদেশি জাতের জন্তুদের থেকে দেশি সারমেয়দের প্রতি বেশি পছন্দ করেন মুণিশ। প্রায় ন’বছর আগে ওরিও আচমকাই তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করে। ছোট্ট এই সারমেয়কে দেখে প্রেমে পড়ে যান কংগ্রেস প্রার্থী। সাধারণত বাড়ির সামনে অন্যান্য দেশি পথকুকুরদের লাগাতার খাবার দিয়ে থাকলেও কাউকে বাড়িতে এর আগে জায়গা দেননি তিনি।
তবে খানিকটা দাবি দেখিয়েই যেন ‘ওরিও’ মুনিশ তামাংয়ের ঘরকে নিজের ঘর করে ফেলে। আর তার পর থেকে লাগাতার দিল্লির বাড়িতে কর্তৃত্ব ফলাতে থাকে ওরিও। বাড়িতে কেউ আচমকা ঢুকতে গেলেই বাধা সৃষ্টি করে সে। আবার বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে মন খারাপ হয়ে যায় ওরিওর। বাড়ির সকলের আনন্দে পরিবারের সদস্যদের মতো মেতে ওঠে সে। তাই এহেনও এক পরিবারের সদস্যকে ফেলে দূরে আসলে তাকে যে ‘মিস’ করতেই হবে তা বলাই বাহুল্য। তাই প্রচারে যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন একবার হলেও টেলিফোনে নিজের গলার স্বর ও প্রান্তে থাকা ‘ওরিও’কে শোনাতে হয় রোজ নিয়ম করে। গলার স্বর শুনে প্রভুভক্ত ‘ওরিও’ এক লহমায় হয়ে যায় চনমনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.