দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে পোষ্টার ভাঙড়ে। ওই এলাকায় যে কোন অশান্তির কারিগর শওকত, এমন দাবি তুলে একাধিক পোষ্টার লাগানো হয়েছে পোলেরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। নির্বাচনের আবহে শাসকদলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার বিরুদ্ধে কে বা কারা এমন পোষ্টার লাগিয়েছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। এ নিয়ে মৌখিকভাবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে পোলেরহাট থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কি আছে ওই পোষ্টারে? এ ফোর সাইজের সাদা কাগজে লেখা, “ক্যানিং ও জীবনতলা থেকে লোক এনে ভাঙড়ে সন্ত্রাস করে খুন করল। সেই খুনের দায়ে আরাবুল জেলে, শওকত মোল্লা বাইরে কেন? প্রশাসন জবাব দাও।” আরেকটি পোষ্টারে লেখা, “মুখ্যমন্ত্রী দ্বারা স্বীকৃত বোমা, গুলির মাস্টারমাইন্ড শওকত মোল্লার এই ভাঙড়ে ঠাঁই নাই।” পোস্টারে আরও লেখা হয়েছে, “সুগত বসু, কবীর সুমন, মিমি চক্রবর্তী সাংসদ হয়ে ভাঙড়ে কি কাজ করেছেন সায়নী ঘোষ, শওকত মোল্লা জবাব দাও।” শ্যামনগর মোড়ে সাঁটানো আরেকটি পোষ্টারে লেখা, “জনগণের প্রকল্পের টাকা চুরি করে নেতা-মন্ত্রীরা জেলে কেন? কয়লা কাণ্ডে অভিযুক্ত শওকত মোল্লা জবাব দাও।” মূলত শওকত বিরোধী বিভিন্ন ধরনের বিদ্বেষমূলক পোস্টার পড়েছে হাড়োয়া রোডের দুধারে।
কে কা কারা রাতের অন্ধকারে ওই পোষ্টার লাগাল তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এতদিন ভাঙড়ে যে কোন ধরনের বড় গণ্ডগোল বা রাজনৈতিক অশান্তি, দুর্নীতির জন্য আরাবুল ইসলামকে নিশানা করত বিরোধীরা। গত আড়াই মাস ধরে আরাবুল জেলে। তাই আরাবুলকে ছেড়ে তাঁর সিনিয়র শওকত মোল্লার দিকে আঙুল উঠছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারিরা। যদিও ওই পোস্টারে কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নাম না থাকায় পিছনে কারা যুক্ত তা নিয়ে সন্দিহান খোদ তৃণমূল নেতারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্যামনগর বাজারে একটি জনসভা করেন শওকত মোল্লা। তার আগে সকাল থেকে এই পোষ্টারে ভোটের উত্তাপ বাড়ল পোলেরহাট ২ এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েত এলাকা মূলত জমি কমিটির আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত। আইএসএফও শ্যামনগর এলাকায় যথেষ্ট শক্তিশালী। ফলে ওই এলাকায় সওকাতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক পোস্টার লাগানোর পিছনে জমি কমিটি নাকি আইএসএফ যুক্ত, সেই তদন্ত শুরু হয়েছে। আবার কারও মতে, শওকত বিরোধী তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর এমন কাজ হতে পারে।
জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান বলেন, “শওকত মোল্লারা গত কয়েকদিন ধরে জমি কমিটির বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অপপ্রচার করে যাচ্ছে এবং অর্থের বিনিময়ে দল ভাঙানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। আজকের পোলেরহাট এলাকার সাধারণ মানুষের উদ্যোগে বাস্তব প্রতিফলন হল এই পোষ্টার।” অভিযোগ অস্বীকার করে আইএসএফের ভাঙড় ২ ব্লক সভাপতি রাইনুর হক বলেন, “আইএসএফ এ ধরনের কুৎসা, অপপ্রচারের রাজনীতি করে না। এই ঘটনার সঙ্গে আইএসএফ কোনোভাবেই জড়িত নয়।” বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শওকত মোল্লা। তিনি জমি কমিটিকে নিশানা করে বলেন, “জমি কমিটি থেকে ওদের লোকজন আমাদের দলে যোগ দিচ্ছে, সেই কারণে ওদের গায়ে জ্বালা ধরেছে। তাই এসব করছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.