সুমন করাতি, হুগলি: হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে এবার রচনা বন্দোপাধ্যায় বনাম লকেট চট্টোপাধ্যায়। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে তৃণমূল বনাম বিজেপির যে একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে, তা ইতিমধ্যেই আন্দাজ করছে রাজনৈতিক মহল। অভিনেত্রী বনাম অভিনেত্রীর লড়াই। বিজেপির হয়ে নির্বাচনে লকেট চট্টোপাধ্যায়, এদিকে তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দোপাধ্যায়। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ খ্যাত রচনা বন্দোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণার পরেই হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে খুশির হাওয়া তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে।
গত লোকসভা ভোটে এই আসনটি হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। আর এবার স্টার ম্যাজিকেই সেই আসন পুনরুদ্ধার হবে বলে আশা করছেন তৃণমূলের কর্মী-সদস্যরা। কারণ বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় গত ভোটে জেতার পর থেকেই তাঁকে আর তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রে তেমনভাবে দেখা যায়নি বলে একটা ক্ষোভ জমেছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। এমনকী পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসে ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল লকেটকে। এছাড়াও বিজেপির আরও বড় মাথা ব্যাথার কারন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে লকেট নিজের নাম নিজেই ঘোষণার পরেই দলের কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাই এবার লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তারকা রচনা বন্দোপাধ্যায়কে তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণা করায় কিছুটা হলেও হুগলিতে ব্যাকফুটে পদ্মশিবির।
প্রার্থী ঘোষণার দিনে জেতার বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী শোনাল তৃণমূল প্রার্থী রচনাকে। এদিন তিনি বলেন, “রাজ্যের দিদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার উপর ভরসা রেখেছেন, এই ভরসার দাম দেব।” অভিনয় থেকে রাজনীতির মাঠে অবতরণ করে যথেষ্ট আশাবাদী তিনি। রচনা আরও জানান, মানুষ তাঁকে ভালোবাসে এটাই তার বড় প্রাপ্তি। প্রচারের ময়দানে তিনি হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যেতে চান।
অপরদিকে রচনার সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ের বিষয়টা যেন অনেকটা এড়িয়েই গেলেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল প্রার্থীর নাম শুনেই তিনি বলেন, “এই ভোটের লড়াই লকেট বনাম রচনা নয়, এই লড়াই মোদী বনাম মমতার। তাদের লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। রচনার সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন অভিনয় করেছি এই লড়াই তাঁর সাথে আমার না, আমরা মোদীজির সৈনিক। তাঁর হয়েই রাজ্যের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমেছি।”
অন্যদিকে, আসন্ন লোকসভা ভোটে হুগলির আসন পুনরুদ্ধার হবে বলেই আশাবাদী হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরিন্দম গুঁইন। তিনি বলেন, “হুগলি জেলার তিনটি আসনে এবার তিনটিই তৃণমূল জিতবে। কারণ এখানকার মানুষের অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থীকে দেখা যায় না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেটা দেখে মানুষ তৃণমূলের সব প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে জেতাবে।”
অপরদিকে, বিজেপির যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য, “এটা লোকসভা ভোট। এখানে নরেন্দ্র মোদিকে দেখে মানুষ ভোট দেয়। আর আগামী দিনেও দেবে। রচনা বন্দোপাধ্যায়কে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর শোতে ভালো লাগে তাই তাঁরা ভোটে তাকে হারিয়ে আবার সেই শোতে পাঠিয়ে দেবেন।” এককথায়, আগামী লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রের দিকে যে সকলের নজর থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.