সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মালদহ দক্ষিণ। এ পর্যন্ত এই লোকসভা কেন্দ্রে একবারও জেতেনি এরাজ্যের শাসকদল। ২০১৯-এ পড়ন্ত বাজারেও এই কেন্দ্র দখলে রেখেছিল কংগ্রেস। যদিও তারপর ২০২১ বিধানসভায় এই এলাকায় কার্যত ক্লিন সুইপ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শাসকদল আশাবাদী এবারে অন্তত মালদহে শিকে ছিঁড়বে তাঁদের কপালে। কিন্তু সে আশায় জল ঢেলে দিতে পারেন ফরাক্কা, সমশেরগঞ্জের বিড়ি শ্রমিকরা। সম্ভবত সেকারণেই ফরাক্কার সভা থেকে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য একাধিক বড় ঘোষণা করে গেলেন মমতা।
আসলে সমশেরগঞ্জ, সুতি, ফরক্কা, সাগরদিঘিতে কয়েক লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের বাস। যাঁদের দীর্ঘদিনের বেতনবৃদ্ধির দাবি পূরণ হয়নি। পুরণ হয়নি ভালো চিকিৎসা পরিষেবার দাবিও। তাতে ক্ষোভ রয়েছে শাসকদলের প্রতি। যে ক্ষোভের আঁচ দেখা গিয়েছিল সাগরদিঘির উপনির্বাচনের সময়। সেই উপনির্বাচনের আগেও শাসকদল বিড়ি শ্রমিকদের বেতনবৃদ্ধির হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। সেটা পূরণ হয়নি। এই এলাকায় যে সব বিড়ি শিল্পপতি রয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই আবার তৃণমূলের নেতা। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ বেড়েছে বিড়ি শ্রমিকদের। লোকসভায় যাতে সেই ক্ষোভের আঁচ না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করতে ফরাক্কার সভা থেকে একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন ফরাক্কা থেকে মমতা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন, ভোট (Lok Sabha 2024) মিটলেই বিড়ি শ্রমিকদের বেতনবৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন তিনি। মমতা এদিন বললেন, “বিড়ি শ্রমিকরা আগে কিছুই পেতেন না। এখনও যা পাচ্ছেন, সেটা তাঁদের জন্য যথেষ্ট নয়। আসলে এগুলো প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রি। তা সত্ত্বেও আমি আমার শিল্পমন্ত্রী এবং শ্রমমন্ত্রীকে বলব, সবার সঙ্গে কথা বলতে। যাতে সবদিক থেকে সুরাহা বের করা হয়।” মমতা মনে করিয়েছেন, তাঁর সরকার সামাজিক সুরক্ষা যোজনার মতো প্রকল্প এনেছে। যাতে বহু বিড়ি শ্রমিকও রয়েছেন।
বিড়ি শ্রমিকদের বড় অভিযোগের জায়গা, উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়া। সেটার অভিনব সমাধান খুঁজে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা তৃণমূলের (TMC) সঙ্গে যুক্ত বিড়ি মালিকদের অনুরোধ করেছেন, তাঁরা যেন নিজেদের উদ্যোগে একটি বিশেষ হাসপাতাল তৈরি করেন। তাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বিড়ি শ্রমিকদের। সরকার তো স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা দিচ্ছেই। সেই স্বাস্থ্যসাথী থেকেই রোজগার হবে হাসপাতালের। রোজগারও হবে, আবার পরিষেবাও দেওয়া হবে।” নির্বাচনী আচরণবিধি (MCC) চলছে। তাই বড় ঘোষণা করতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী। তবে তিনি যে যে ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন, তাতে বিড়ি শ্রমিকদের মন গলবে কিনা সেটার উপর নির্ভর করছে দক্ষিণ মালদহ এবং জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের ফলাফল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.