রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও দিব্যেন্দু মজুমদার: লকেট চট্টোপাধ্যায়কে (Locket Chatterjee) বাদ দিয়েই হুগলিতে কর্মসূচি করল বিজেপি। সেই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এলাকার সাংসদ লকেটকে কেন সেই কর্মসূচিতে রাখা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যেই। নাড্ডার সফরের ঠিক আগে এই ঘটনায় ফের প্রকট বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল।
জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে হুগলিতে যখন সুকান্তর নেতৃত্বে এসএসসি ইস্যুতে জেলা শাসকের দপ্তর অভিযান কর্মসূচি চলছে তখন আসানসোলে দলের একটি কর্মসূচিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে লকেটকে। দলের সাংসদই শুধু তিনি নন, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। দলের আন্দোলনের মুখও তিনি। অথচ হুগলিতে দলের কর্মসূচিতে সেখানকার সাংসদকেই ডাকা হল না। আর যদি আসানসোলে তাঁকে দলের কর্মসূচি দেওয়াও হয়, তাহলে এইদিন হুগলিতে কেন জেলাশাসকের দপ্তর অভিযান করল বিজেপি? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলেও।
দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সুকান্ত-অমিতাভদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন লকেট। বাদ পড়া দলের আদি নেতাদের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। তাহলে কি সেই বিরোধের কারণেই সুকান্ত-অমিতাভ শিবির এদিন হুগলির কর্মসূচিতে লকেটকে ডাকলেন না? অথচ, সেই কর্মসূচিতে একাধিক নেতাকে দেখা গিয়েছে। সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তুষার মজুমদার, বিধায়ক বিমান ঘোষ, বিজেপি রাজ্য নেতা সুরেশ সাউ, দীপাঞ্জন গুহ, স্বপন পালেরা ছিলেন।
এসএসসি দুর্নীতি, ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে বেনিয়ম-সহ বিভিন্ন দুর্নীতির প্রতিবাদে এদিন বিজেপির হুগলি জেলা শাসকের দপ্তরে অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয় চুঁচুড়া। দুপুর ১২ টায় হুগলি জেলা কার্যালয় থেকে বিজেপির মিছিল শুরু হয়। মিছিল কারবালা মোড়, পিপুলপাতি, হাসপাতাল রোড হয়ে জেলাশাসকের দপ্তরে যাওয়ার কথা থাকলেও পথে দুই জায়গায় মিছিল আটকানোর জন্য পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। কিন্তু মিছিল যত এগিয়েছে ততই অশান্তির সম্ভাবনা প্রবল হয়ে দেখা দেওয়ায় পুলিশ কারবালা মোড় ও ঋষিকেশ পল্লীর ব্যারিকেড সরিয়ে নেয়। কিন্তু পিপুলপাতির কাছে পুলিশের তিন নম্বর ব্যারিকেড বিক্ষোভকারীরা ভেঙে দিতেই চূড়ান্ত উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
পরিকল্পিতভাবেই অশান্তি বাঁধিয়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ করার চেষ্টা করে গেরুয়া কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। আইন অমান্য করায় বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তুষার মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত জেলা সভাপতিকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে এদিনের এই কর্মসূচিতে স্থানীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরাও প্রশ্ন তুলেছেন। সাংসদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, বিজেপি সরকারের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে রাজ্যের বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে যেতে হচ্ছে। তাই তিনি সব জায়গায় সময় দিতে পারছেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.