সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিস্থিতি সামলাতে এবার নির্দিষ্ট এলাকা কিংবা কোনও শহর বা গ্রামে প্রয়োজন অনুযায়ী এক সপ্তাহ পর্যন্ত টানা লকডাউন করা যাবে। স্থানীয়ভাবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন জেলাশাসক, ডিজিপি ও কলকাতার ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার। রবিবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর অ্যাডভাইজারি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে আঞ্চলিকভাবে লকডাউন চললেও জেলার করোনা পরিস্থিতি বিচার করে এই সময়সীমা জেলাশাসকরা বাড়াতে পারেন। পাঁচ থেকে সাতদিন পর্যন্ত চলতে পারে টানা লকডাউন।
জেলাগুলির করোনা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে নবান্নের পর্যবেক্ষণ, এলাকাভিত্তিক লকডাউন করলে সেখানে কমছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিছুটা হলেও লাগাম টানা যাচ্ছে করোনার দাপটে। হাতেনাতে প্রমাণ মিলেছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে। কড়া লকডাউনে এক ধাক্কায় আক্রান্তের হার ১০ থেকে কমে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে! গত ১০ দিনে সংক্রমিতের সংখ্যা মাত্র ১৩। তাই আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত এভাবেই লকডাউন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উদয়নারায়ণপুর ব্লক ও পুলিশ প্রশাসন। উদয়নারায়ণপুরে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সংক্রমণও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় ৩৯টি কন্টেনমেন্ট জোনের মধ্যে ১১টি এলাকা শুধু উদয়নারায়ণপুরেই। এরপরই ১১ জুলাই ব্লক প্রশাসন সংক্রমণ রুখতে উদয়নারায়ণপুরে ফের লকডাউন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, ১১ জুলাইয়ের আগে পর্যন্ত উদয়নারায়ণপুরে প্রায় ১১০০ লালারস পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে দেখা যায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা শতাধিক। ১১ জুলাই থেকে নতুন করে ফের লকডাউন শুরু হয় উদয়নারায়ণপুরে। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই দশ দিনে ২৩৮ জনের লালারস পরীক্ষা করানো হয়েছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ১৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ হয়েছে। শতাংশের হিসাবে যা পাঁচ শতাংশের একটু বেশি। প্রশাসনের আশা, আর কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন করে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ দমদম ও দমদম পুর এলাকাতেও সোমবার থেকে কড়া লকডাউন হবে। সকাল ১১টার পর থেকে সমস্ত দোকানপাট-বাজার বন্ধ থাকবে। উত্তর দমদম পুর এলাকায় শনিবার থেকেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এলাকার সংযোগকারী দুই মূল রাস্তা যশোর রোড ও দমদম রোড ছাড়া অন্য রাস্তায় ভারী যানবাহন চলবে না। দমদম পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান হরিন্দার সিং জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থা আগামী এক সপ্তাহের জন্য জারি থাকবে।
হুগলির আরামবাগে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় সোমবার থেকে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরামবাগ মহকুমা প্রশাসন। জেলাগুলিতেও লকডাউন এলাকাভিত্তিক আরও কড়া হচ্ছে। আসানসোল পুরনিগমের রানিগঞ্জের বেশ কিছু ওয়ার্ডে এদিন ফের লকডাউন করা হয়। বর্ধমানের বেশিরভাগ ওয়ার্ডই লকডাউনের আওতায়। কালনা পুর এলাকায় বিকেল পাঁচটা থেকে ভোর ছ’টা পর্যন্ত লকডাউন চলছে। সাইরেন বাজিয়ে মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিলিগুড়ির অবস্থাও বেশ খারাপ। বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই করোনার দাপট। ফলে সেখানে নতুন করে আরও হটস্পটে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। মালদহের হরিশচন্দ্রপুর, গাজোলেও নজর রাখা হচ্ছে। কম—বেশি সব জেলাতেই তাই এলাকাভিত্তিক লকডাউন করার পথে হাঁটতে চাইছে প্রশাসন। এদিন সেই অ্যাডভাইজারিই জারি করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.