ধীমান রায়, কাটোয়া: ঠিকাদারকে রাস্তা তৈরির বরাত দিয়েছে পুরসভা। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দারা ঠিকাদারদের চাপ দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। অতিরিক্ত কাজের বিল মেটায়নি পুর কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা পুরসভার অফিসে কার্যত তাণ্ডব চালালেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। চেয়ারম্যান ও দুই কাউন্সিলরকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান বুর্ধেন্দু রায়। একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শহরাঞ্চলে রাস্তাঘাট তৈরি-সহ নাগরিকদের বিভিন্ন পরিষেবা দেয় পুরসভা। নাগরিকদের চাহিদা ও দাবি মেনে কাজ করতে হয় নির্বাচিত পুর প্রতিনিধিদের। পুরসভার কাজ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ থাকাটাও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু, পুরসভার তত্বাবধানে চলা কোনও প্রকল্পে কী নাক গলাতে পারেন সাধারণ নাগরিক? ঠিকাদারকে চাপ দিয়ে কী অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেওয়া যায়? এই প্রশ্নে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা পুরসভা দপ্তরে।
শহরের একটি ইদগাহে যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুসকরা পুরসভা। নিয়মামাফিক রাস্তার তৈরি বরাতও দেওয়া হয়েছিল ঠিকাদারকে। পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ঠিকাদারকে চাপ দিয়ে প্ল্যান বর্হিভূত অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই কাজের জন্য পাঁচ লক্ষেরও বেশি টাকার বিল জমা পড়েছে পুরসভায়। কিন্তু সরকারি নিয়মে প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক বরাদ্দ পেতে সময় লাগে। কিন্তু, অপেক্ষা করতে রাজি নন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। মঙ্গলবার দুপুরে ঠিকাদারের বকেয়া মিল মেটানোর দাবিতে গুসকরা পুরসভার দপ্তরে তাণ্ডব চালালেন তাঁরা। নির্বিচারে চলল ভাঙচুর। এমনকী, চেয়ারম্যান ও দুইজন কাউন্সিলরকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত, পুরসভার কর্মী ও স্থানীয় কয়েকজনের প্রতিরোধের মুখে পড়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যানের অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। চেয়ারম্যান বুর্ধেন্দু রায় জানিয়েছেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম, সানোয়ার মল্লিকের নেতৃত্বে পুরসভার অফিসে হামলা চালায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। চলেছে ভাঙুচুর। একজন কাউন্সিলরের নগদ টাকা ও সোনার হারও ছিনতাই হয়ে গিয়েছে। তবে হামলার কারণ নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি তিনি।
[INTTUC-র জাল প্যাড ছাপিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ, কাঠগড়ায় ‘স্বঘোষিত’ তৃণমূল নেতা]
জানা গিয়েছে, গুসকরা শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইটচাঁদা এলাকায় একটি ইদগাহ আছে। সেখানে যাতায়াতের জন্য ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে ঢালাই রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে পুরসভা। টেন্ডার মেনেই কাজ হয়েছে। কিন্তু, চাপ দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানোই শুধু নয়, স্থানীয় বাসিন্দারা ঠিকাদারকে সেই কাজের টাকাও আদায় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার দুপুরে পুরসভার গিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে অতিরিক্ত ৫ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি করেন তাঁরা। কিন্তু, চেয়ারম্যান বুর্ধেন্দু রায় পদ্ধতিগত সমস্যার কথা বললেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
ছবি: জয়ন্ত দাস
[অসুস্থ আরাবুল ইসলাম, জামিনের আবেদন শুনলেনই না বারুইপুর আদালতের বিচারক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.