সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: প্রথা ভেঙে স্রোতের বিপরীতে হাঁটার চেষ্টা করেছিল দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠ। ঠিক হয়েছিল চিরাচরিত নিয়ম থেকে বেড়িয়ে এবার সরস্বতী পুজোয় পুরোহিতের আসনে বসবে স্কুলেরই তিনছাত্রী। প্রথম দিকে সব ঠিক থাকলেও পুলিশ ও স্থানীয়দের বাধায় শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হল স্কুল কর্তৃপক্ষ। এমনকী স্থানীয়দের দাবি মেনে পুজোর আগে স্কুল ছাড়তে হল মুসলিম প্রধান শিক্ষককে।
এবার সরস্বতী পুজোয় ছক ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছিল ভাদুবালা বিদ্যাপীঠ। পরিকল্পনা ছিল গোটা পুজোটাই হবে ছাত্রীদের ব্যবস্থাপনায়। রাত জেগে সামিয়ানা খাটানো, আলপনা আঁকা কিংবা রঙিন কাগজের শিকল তৈরি সবেতেই ছাত্রীরা। পুজোর দিন সকালে ফল কাটা থেকে প্রসাদ বিতরণও করবে তারাই। ব্রাক্ষণ পুরুষই যে একমাত্র পুরোহিত হতে পারে, এই ধারনার বদল ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঠিক হয় স্কুলেরই তিন ছাত্রী পুরোহিতের আসনে বসবে। কিন্তু বিষয়টি চাউর হতেই চাপানউতোর শুরু হয় পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে। নিয়ম মেনে পুজো করতে হবে এই দাবি জানিয়ে দফায় দফায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করেন দুর্গাপুর-ফরিদপুরের বিডিও ও নিউটাউনশীপ থানার পুলিশ।
বুধবার সকাল থেকেই স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে স্থানীয়রা। পুলিশের উপস্থিতিতেই চিরাচরিত নিয়ম মেনে সরস্বতী আরাধনার দাবিতে সরব হন তাঁরা। সঙ্গে পুরুষ ব্রাহ্মন পুরোহিতও নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। লাগাতার চাপের মুখে পিছু হটতে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। এমনকী পুজোয় প্রধান শিক্ষক জইনুল হকের উপস্থিতি নিয়েও আপত্তি জানান গ্রামবাসীরা। দাবি মেনে প্রধান শিক্ষক স্কুল ছাড়তেই পুজোয় বসেন পুরুষ পুরোহিত। এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বলেন,” টিচার্স কাউন্সিল, স্টাফ কাউন্সিল ও ছাত্রীদের সম্মতি নিয়েই পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়রা স্কুলে অভিভাবক না হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের স্বার্থে আঘাত পড়াতেই বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের দাবি মেনে পুজো করা হল স্কুলে।” এসডিও অনির্বাণ কোলের কথায়, পুজো ঐতিহ্য মেনেই করতে হবে। এই নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা না করাই কাম্য।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.