Advertisement
Advertisement

মুখ ফিরিয়ে রেল, স্টেশনে পড়ে থাকা অসুস্থ বৃদ্ধাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা স্থানীয়দের

হাসপাতালে ভরতি করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের৷

locals helped ailing woman at Katwa
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:September 27, 2018 5:49 pm
  • Updated:September 27, 2018 5:49 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: শীর্ণ কঙ্কালসার চেহারা। গায়ে জড়ানো বহুদিনের নোংরা ছেঁড়া কাপড়। হাঁটুজোড়া মুড়ে শুয়ে রয়েছে। নড়াচড়ার শক্তিটুকুও নেই। অসুস্থ ও অভুক্ত অবস্থায় প্রায় ৮-১০দিন ধরে কাটোয়া রেল স্টেশনে এভাবেই পড়েছিলেন ঠিকানাহীন বৃদ্ধা। রেল পুলিশ বা রেল কর্মচারীদের নজরে পড়লেও তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসায় পাঠানোর হয়নি৷ পরে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করলেন কাটোয়ার কয়েকজন তরুণ-তরুণী। শুধু তাই নয়, বৃদ্ধার পাশে থাকারও মন্মথ করেছেন তাঁরা। কাটোয়ার কয়েকজন তরুণ-তরুণীর এই মানবিকতাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।

[ইসলামপুরে ছাত্রমৃত্যুর তদন্তে সিআইডি]

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া রেলস্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধার উঠে বসার মতো ক্ষমতা ছিল না। কথা বলতে পারছিলেন না। সময়ে সময়ে খিদে পেলে ঘাড় ঘুরিয়ে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চাইছিলেন। তখন কেউ এক টুকরো রুটি বা কেক তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছেন। কেউ দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছেন।

Advertisement

[মদকাণ্ডের জেরে তুফানগঞ্জ আইটিআইয়ের অধ্যক্ষকে শোকজ]

জানা গিয়েছে, কাটোয়ার কয়েকজন তরুণ-তরুণী একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালাচ্ছেন৷ যাঁদের উদ্দেশ্য অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। স্টেশনে বৃদ্ধের অসুস্থতার খবর পেয়ে পুলক বিশ্বাস, বাবলু ঘোষ, প্রভাতী কর্মকার এরকম কয়েকজন ওই সংস্থার সদস্য রেলস্টেশনে পড়ে থাকা বৃদ্ধাকে দেখতে যান৷ পুলকবাবু বলেন, ‘‘যেহেতু রেলের জায়গায় পড়েছিলেন, তাই প্রথমে রেল পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁদের কাছে সাহায্য চাই। তারা আমাদের ডাকে সাড়া দেননি। তারপর স্টেশন মাস্টারকে বলি। তিনি আমাদের পরামর্শ দেন কাটোয়া হাসপাতালে ভরতি করতে। আমরা তারপর সেখানে ভরতি করে দিই।”

[বনধের মধ্যেই স্কুলে ঢুকে ছাত্রকে মার বিজেপির সমর্থকদের]

এখানেই শেষ নয়, হাসপাতালে ভরতি করতে গিয়েও প্রথমে বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। প্রভাতী কর্মকার বলেন, ‘‘বৃদ্ধার পরনে নোংরা কাপড় থাকায় হাসপাতালে ভরতি নিতে প্রথমে রাজি হয়নি৷ তারপর আমরা একটি নতুন কাপড় কিনে এনে পরিয়ে দিই। তারপর ভরতি করানো হয়৷।”  হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধা বার্ধক্যজনিত রোগের পাশাপাশি অপুষ্টির শিকার। বর্তমানে কথা বলতেও পারছেন না। নিজের পরিচয় দিতে পারেননি। নাম জানতে চাইলে তিনি শুধু বলেছেন, ‘‘আমার নাম সত্যরানি। আমি জেলেবাড়ির মেয়ে৷” ওই তরুণ-তরুণীরা পালা করে বৃদ্ধার তদারকি করছেন বলে জানা গিয়েছে।

ছবি: জয়ন্ত দাস৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement